দীর্ঘ বছর ধরে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের উত্তর নানুপুর গ্রাম এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন অব্যাহত। সম্প্রতি এই ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়েছে। যার ফলে এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক বসতবাড়ি এবং বহু ফসলি জমি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন হলে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে নানুপুর গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অংশ। ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। বিশেষ করে শুকনো মৌসুমে এই ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে।
ভাঙন রক্ষায় ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তর নানুপুর গ্রামে নদী তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। তারা ভাঙন প্রতিরোধে এবং পৈত্রিক ভিটা রক্ষায় সরকারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভাঙনের শিকার স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান পাটোয়ারী ও শাহাদাত তালুকদার বলেন, নদীর পাশে এই ফসলি জমিগুলো অনেক বড় ছিল এবং কৃষকরা ফসল আবাদ করতেন। বর্তমানে প্রত্যেকটি ফসলি জমি এমন অবস্থায় আছে যে আগামী বছর আর একটাও ফসলি জমি থাকবে না। যদি এলাকার অসহায় কৃষকের এই ফসলি জমিগুলো সম্পূর্ণ ভেঙে যায় তাহলে কীভাবে চলবে তাদের সংসার। আমরা ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মাজেদা, হনুফা ও রওশন আরা বেগম বলেন, বিগত দুই দশক ধরে আমাদের ঘরবাড়ি, ভিটেমাটি ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বহু জনপ্রতিনিধির কাছে গিয়েছে, তারা এসেছে, কিন্তু আমাদের ভাঙন প্রতিরোধে এগিয়ে আসে না। এখন সন্তানদের নিয়ে আমরা কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না। বর্তমান সরকার যদি নদীভাঙন প্রতিরোধে এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের ভিটেমাটি রক্ষা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম ভাঙন বিষয়ে বলেন, ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন প্রবণতা রয়েছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী কাজ বাস্তবায়নে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি অনুমোদন হলেই ভাঙন রক্ষায় কাজ করা হবে।