ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সিরাজগঞ্জের ত্রিপল হত্যা মামলায় ভাগ্নের মৃত্যুদন্ড

সিরাজগঞ্জের ত্রিপল হত্যা মামলায় ভাগ্নের মৃত্যুদন্ড

সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর ত্রিপল হত্যা মামলায় ভাগ্নে রাজীব কুমার ভৌমিককে (৩৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেলে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত রাজীব উল্লাপাড়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের বিশ্বনাথ ভৌমিকের ছেলে। বর্তমানে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের অতিরিক্ত পিপি হামিদুল ইসলাম দুলাল।

২০২৪ সালের ২০ জানুয়ারি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার গোপালজিউ মন্দির সংলগ্ন একটি ফ্ল্যাট থেকে বিকাশ সরকার (৪৫), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৩৫) ও তাদের কলেজপড়ুয়া মেয়ে পারমিতা সরকার তুষির (১৭) গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহত স্বর্ণা রানীর ভাই সুকমল সাহা বাদী হয়ে তাড়াশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। একমাত্র আসামি ছিলেন বিকাশের ভাগ্নে রাজীব কুমার ভৌমিক। মামলার তদন্তে উঠে আসে, পারিবারিক ব্যবসায়িক বিরোধ থেকেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজীব পুলিশকে জানায়, বাবার মৃত্যুর পর ২০২১ সালে মামা বিকাশের সাথে যৌথভাবে ব্যবসায় যুক্ত হলে পুঁজি হিসেবে ২০ লাখ টাকা দেন বিকাশ। এ ব্যবসা করে রাজীব তার মামাকে ধাপে ধাপে লভ্যাংশসহ প্রায় ২৬ লাখ টাকা ফেরত দেয়া হয়। পরবর্তীতে আরো ৩৫ লাখ টাকা দাবি করে মামা বিকাশ। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি ওই টাকা ৭ দিনের মধ্যে ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দেয় মামা। রাজিব এ টাকা মামাকে ফেরত দিতে ব্যর্থ হয় এবং মামাসহ পরিবারের সবার সাথে বকাবকি ও কথা কাটাকাটি হয়। এতে রাজিব ক্ষিপ্ত হয়ে ওই পরিবারের মামা মামি ও মামাতো বোনকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার দিন একটি লোহার রড ও একটি হাঁসুয়া সংগ্রহ করে এবং বিকেল পৌনে ৫ টার দিকে মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা ফেরত দিতে চায়। এসময় মামা বাইরে থাকায় টাকা তার মামির কাছে দেয়ার জন্য বলা হয়। মামার কথামতে রাজীব বাসায় গিয়ে মামিকে কফি খাওয়ানোর জন্য বললে বাসার ৩ তলা থেকে নিচের দোকানে কফি আনতে যায় মামি। এ সুযোগে রাজীব মামাতো বোনকে খুন করে। ইতিমধ্যে মামি কফি নিয়ে বাসা ঢুকলে তাকেও খুন করে এবং কিছুক্ষণ পর মামা বাসায় আসলে তাকেও জবাই করে হত্যা করা হয়।

পরদিন সকালে পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ডিবি পুলিশ রাজিবকে গ্রেফতার করে এবং পরে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রাজীব হত্যার পরিকল্পনা ও ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। সব প্রমাণ ও সাক্ষ্য-পর্যালোচনার পর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদন্ড
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত