২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ চান জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। এছাড়া বাকি আসামিদের সাত বছর করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডলের আদালত এই রায় দেন। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে একই আদালত আজ রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। ওইদিন সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৩৮ জন আসামিকে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।
আলোচিত এই মামলায় অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার নামে এক আসামি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এছাড়া ৯ জন আসামি পলাতক রয়েছেন এবং দুজন মারা গেছেন।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকাবস্থায় ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে ওইদিন বেলা ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ১২ জন নেতাকর্মী আহত হন।
পরবর্তীকালে ওই ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। পরে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিন ভাগে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে সাক্ষী করা হয় ৩০ জনকে। তবে ৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি স্থগিত করা হয়। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।