রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যার দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর।
সোমবার (১৫ মে) রাজশাহী জেলার কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, রোববার (১৪ মে) সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসরণ না করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিষয় চ্যালেঞ্জ করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর হোসেনের করা রিট খারিজ করে দেন আদালত।
এর ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি শিক্ষক মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাঁধা নেই। তবে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ পাবেন তারা।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর বড় ভাই আব্দুস সালাম।
তবে বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিরা আপিল করেন। পরে শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল মামলার দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রেখে অপর দুই আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরবর্তীতে শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। সবশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রিভিউর ওপর শুনানি শুরু হয়।