ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নেত্রকোণায় আটবছরেও শেষ হয়নি তুহিন হত্যার বিচারকাজ

নেত্রকোণায় আটবছরেও শেষ হয়নি তুহিন হত্যার বিচারকাজ

নেত্রকোণায় দীর্ঘ আটবছরেও ছোট ভাই তুহিন হত্যার বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন বড় ভাই লুৎফুর রহমান ও তাদের পরিবার। লুৎফুর রহমান জেলার আটপাড়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। তার ছোট ভাই মুশফিকুর রহমান ওরফে তুহিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া, ‘অপরাধ জগৎ’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করতেন তিনি।

জানা যায়, তুহিনকে ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ভোররাতে তাদের নিজবাড়ির বসতঘরে কুপিয়ে আহত করে দূর্বৃত্তরা। ওইদিনই পার্শ্ববর্তী বারহাট্টা উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় ৯ অক্টোবর তুহিনের বড় ভাই লুৎফুর রহমান লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আটপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি সুলতান উদ্দিনসহ ২৭ জনকে আসামী করে আটপাড়া থানায় মামলা করেন। রবিবার (৮ অক্টোবর, ২০২৩) মামলার ৮বছর পূর্ণ হতে চলেছে।

মামলার বাদী লুৎফুর রহমান ও পুলিশসূত্রে জানা যায়, আটপাড়া উপজেলার হাঁসকুরি বিলের ইজারা নিয়ে তুহিনের সঙ্গে একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কুতুবপুর ও নারাচাতল গ্রামের বেশ কয়েকজনের বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে তুহিনের বসতঘরে ঢুকে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। ঘটনার সময় ধস্তাধস্তিতে লক্ষ্মীপুর গ্রামের তাজাত খাঁ ও আমীর খাঁ নামের দুই ব্যক্তি আহত হন। ওই দিনই পুলিশ আহত দুজনসহ লক্ষ্মীপুর গ্রামের রহমত মিয়া ও বাবুল মিয়া নামের মোট চার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। বর্তমানে তাঁরা সবাই জামিনে রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তুহিনকে হত্যা মামলাটির তদন্তভার ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর আটপাড়া থানার পুলিশের কাছ থেকে সিআইডিকে দেওয়া হয়। তিনবার তদন্ত কর্মকর্তা বদলায়। সর্বশেষ সিআইডি ময়মনসিংহ বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজাহান তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১২ অক্টোবর ২২ জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দেন।

মামলার বাদী লুৎফর রহমান বলেন, অভিযোগপত্রে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম বাদ পড়ায় সিআইডির অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেওয়া হয়। আদালত কর্তৃক তা মঞ্জুর করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ৩৪ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মামলাটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন এবং এখন সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে আছে।

বাদী লুৎফর রহমান আক্ষেপের সাথে বলেন, ‘আমার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। ভাইকেতো আর ফিরে পাব না। মরার আগে ভাইয়ের হত্যার বিচার দেখে যেতে পারলেও একটু শান্তি মিলতো।’

নেত্রকোণা,হত্যা,বিচারকাজ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত