বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজ হত্যা মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে মেট্রোপলিটন চিফ আদালত রংপুরের বিচারক আসাদুজ্জামান তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ সকালে ৭ দিনের রিমান্ড শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) বিজন আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মেরাজুল হত্যা মামলায় তুষার কান্তি মন্ডলের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
এর আগে, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহির হত্যা মামলায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর তুষার কান্তি মন্ডলের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাভার থেকে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা তুষার কান্তি মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চারটি হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে। রিমান্ডে নেয়া তুষার কান্তি মন্ডলের বিরুদ্ধে সমবায় ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ ও সমবায় ভবন নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাটসহ আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। তিনি রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার পক্ষে কাজ না করায় তার নেতৃত্বাধীন কমিটি ভেঙে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজ নিহতের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট নিহতের সহধর্মিণী নাজমিম ইসলাম বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট মেরাজুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তার মা আম্বিয়া বেগম বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল সিটি কর্পোরেশনের ফুটওভার ব্রিজের কাছে আসে। এ সময় আসামিরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনিভাবে মিছিলে বাধা দেয়। মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকলে রংপুর পুলিশ সুপার সতর্ক না করে পুলিশের এপিসিতে উঠে গুলি ও ইটপাটকেল ছোড়ার নির্দেশ দেন। এ সময় আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। এরই একপর্যায়ে মেরাজুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
নিহত মেরাজুল ইসলাম মেরাজ (৩৫) নগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার শামসুল হক-আম্বিয়া বেগম দম্পতির সন্তান। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। মেরাজুল নগরীর সিটি বাজার এলাকায় ফল বিক্রি করতেন।