ঢাকা ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

ডলারের দাম আরও এক টাকা বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ডলারের দাম আরও এক টাকা বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ডলারের দাম আরও ১ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এখন যারা ডলার কিনবেন, তাদের প্রতি ডলারের জন্য গুনতে হবে ১০০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে ডলারের দাম আরও ১ টাকা বাড়াল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বিক্রি করা ডলারের দাম বাড়িয়ে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাজারের দামের সঙ্গে সংগতি বজায় রাখতে নতুন করে ডলারের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে এখন বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক যে ডলার বিক্রি করবে, তার প্রতি ডলারের দাম হবে ১০০ টাকা। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে ডলার সংকট দেখা দেয়। তাতে হু হু করে বাজারে বাড়তে থাকে ডলারের দাম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ধাপে ধাপে ডলারের দাম বাড়াতে থাকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের এপ্রিলেও প্রতি ডলারের বিক্রয়মূল্য ছিল ৮৬ টাকার আশপাশে। এখন তা প্রায় সোয়া ১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকায়।

দেশে ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে খোলাবাজার ও ব্যাংকের ডলারের দামের সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিক্রি করা ডলারের দামের কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যাংকগুলোয় ডলারের দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দামের চেয়ে বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক মূলত সরকারের খাদ্য, জ্বালানি, কীটনাশক আমদানির পাশাপাশি বেসরকারি খাতের কিছু পণ্য আমদানির জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে। এসব আমদানির ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ দাম কার্যকর হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন ডলারের দাম বাড়ায়, তখন তা আমদানির ওপরও প্রভাব ফেলে। কারণ, তাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার কিনে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, সেগুলোর আমদানি খরচও বেড়ে যায়।

সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রির ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলারে। আগামী সপ্তাহের শুরুতে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন বা আকুর পাওনা ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি পরিশোধ করতে হবে। তখন রিজার্ভ আরও কমে যাবে। এদিকে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার হলেও প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ আরও ৮ বিলিয়ন কম। কারণ রিজার্ভের অর্থ থেকে রফতানি উন্নয়ন তহবিলসহ বিভিন্ন খাতে এ পরিমাণ ডলার বিনিয়োগ করা আছে।

এদিকে, গত সোমবার রফতানিকারকদের ক্ষেত্রে ডলারের দাম ১ টাকা বাড়িয়েছে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। ফলে এখন থেকে রফতানিকারকেরা প্রতি ডলারের বিপরীতে পাবেন ১০২ টাকা। নতুন এ সিদ্ধান্ত গত সোমবার থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে বেসরকারি খাতের রফতানি, আমদানি ও প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করে আসছে এবিবি ও বাফেদা। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে এখন প্রতি ডলারের বিপরীতে মিলছে ১০৭ টাকা। আর আমদানির দায় পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের নির্ধারণ করা হয়েছে প্রবাসী ও রফতানি আয়ের গড়ের চেয়ে ৫০ পয়সা বেশি।

বর্তমানে প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম ১০৭ টাকা আর রফতানি আয়ে এ দাম ১০২ টাকা। সেই হিসাবে প্রবাসী ও রফতানি আয়ের গড় দাঁড়ায় ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা। এ গড়ের সঙ্গে ৫০ পয়সা যোগ করে ১০৫ টাকা হবে আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম।

বাংলাদেশ ব্যাংক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত