ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব তৈরি করেছে। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি ঝুঁকছে মানুষ। যার প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে হু হু করে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। গতকাল রোববার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২২ দশমিক ১৮ ডলার। এর মধ্য দিয়ে গত এক মাসে দাম বাড়ল ১২১ দশমিক ৬৫ ডলার।
স্বর্ণের দামের এই উল্লম্ফন দেশের বাজারেও দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব রেখেছে। গত শনিবার দেশের বাজারে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৮৩ টাকা বাড়ায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর ফলে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম। শুধু বাংলাদেশে নয় ভারতেও রেকর্ড দাম বেড়েছে। গত শুক্রবার ভারতের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ৫৭ হাজার রুপি। এক দিনের মধ্যে শনিবার সেই দর ৫৭ হাজার ৫০০ রুপির কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
গত বছরের শুরু থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তার ফলে অর্থনীতিতে তৈরি হওয়া আশঙ্কা বুঝতে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকেছিল মানুষ। কিন্তু নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে হিসাব-নিকাশ বদলে যায়। তাই স্বর্ণ থেকে অর্থ তুলে বন্ডে বিনিয়োগ সরিয়ে নেন বিনিয়োগকারীরা। এখন ঘটছে ঠিক তার উল্টো।
টানা কয়েক মাস নীতি সুদহার বাড়ার কারণে বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতি কমার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে নীতি সুদহার বাড়লেও সেই বৃদ্ধির গতি কমতে পারে বলে ধারণা বিনিয়োগকারীদের। সে কারণে আবার তারা বন্ড থেকে স্বর্ণের দিকে ফিরছেন। এর জেরে ধাতুটির চাহিদা ও দাম বাড়ছে তরতরিয়ে।
আবার স্বর্ণ অনেক ক্ষেত্রেই মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বের অনেক দেশ ডলারের পাশপাশি রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণ সংরক্ষণ করে। ব্যবসায়ীরাও অনেক সময় লোকসান ঠেকাতে স্বর্ণ মজুদ করেন। এ কারণে এ মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়ে।