চাঁদপুরে ১২০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি ৫০০ টাকায়

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:১৮ | অনলাইন সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর শহরের পালবাজার ও পুরানবাজারে ভারতীয় কাঁচামরিচ পাইকারিতে প্রতিকেজি ১২০ টাকা থেকে ১৩০টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। অথচ সেই কাঁচা মরিচই খুচরা বিক্রেতারা প্রতারনার মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে। এতে ক্রেতা সাধারণ মারাত্বকভাবে প্রতারনার শিকার হচ্ছে বলে ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ।

পালবাজার ও শহরের বিভিন্ন দোকানে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় ও সর্বনিন্ম ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। 
এছাড়া চাঁদপুর সদরের আড়ৎ থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ কিনে তা বিভিন্ন উপজেলায় নিয়ে বিক্রি করছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। বিশেষ করে বন্যাদুর্গত এলাকায় প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শনিবার (৩১ আগষ্ট) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের পালবাজার, পুরানবাজার, নতুনবাজার, বিপনীবাগ, শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

দেখা যায়, এ সব বাজারের পাইকারী আড়তে ভারতীয় কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে। সেই মরিচই হাত বদল হয়ে দুইগুন ও তিনগুন বাড়িয়ে খুচরা বাজারে বিক্রি করে বেশি মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে বিক্রেতারা। এ অবস্থা দেখার যেন কেহ নেই।

জানা যায়, চাঁদপুর জেলা সদরের বড় বড় পাইকারি আড়তে এ ভারতীয় মরিচ এক শ্রেনীর ব্যবসায়ী ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে আমদানি করে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকে। আমদানিকারক রসুল খা’র ছেলে বাদশা ও হালিম পাটওয়ারীর ছেলে রিপনের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, ভারত থেকে প্রতিকেজি মরিচ শুল্ক ও ভ্যাট দিয়ে ৯০ টাকায় কেনা হয়। সে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। আড়ৎদারের খরচ দিয়ে কেজি প্রতি ২০ টাকা ৩০ টাকা মুনাফা হয়ে থাকে।

চাঁদপুরে গত জুন-জুলাই মাসে চাঁদপুরের দেশীয় কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে মাত্র ৬০ হতে ৭০ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে। তবে হঠাৎ বন্যা ও বৃষ্টির পানির কারণে চর অঞ্চলের মরিচ নষ্ট হয়ে যায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, এর পরই বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা পূরনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা কাঁচা মরিচ বেশী দামে আমদানী করায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ দিয়ে চাহিদা পুরণে বাজারে প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হয় ১০০ টাকা থেকে ১১০ টাকায়। সে মরিচ খুচরা বিক্রি করতে দেখা যায় ১৩০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে।

হঠাৎ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবিরাম বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে যায় ব্যাপক ভাবে। কয়েক দিন কাঁচা মরিচ খুচরা বাজারে ১৮০টাকা থেকে ২০০শ’টাকা বিক্রি হলেও কয়েক দিন পূর্বে ব্যবসায়ীরা আমদানী কম অজুহাতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। আবার দেশের কোথায়ও কোথায়ও ৮০০শ’ টাকা থেকে ১হাজার ও ১২০০শ’টাকা কাঁচা মরিচ বিক্রি খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হয়।

বৃষ্টি কিছুটা কমে যাওয়ায় ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ প্রচুর আমদানি হওয়ায় চাঁদপুরের পাইকারি আড়তে ১২০ টাকা কাঁচা মরিচ বিক্রি হলেও চাঁদপুর শহরের কোর্টস্টেশন এলাকায়, পালবাজার খুচরা বাজারে, ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায়, পৌর সভার সামনে, কুমিল্লা রোড, কালী মন্দিরের সামনে, জোর পুকুর পাড়, নতুন বাজার, বিপনীবাগসহ শহরের বিভিন্ন স্থানের ভ্যানে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় খুচরা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শহরতলীর মৈশাদী, বাবুরহাট, শাহাতলী বাজার, মহামায়া বাজার, ইচলী, বাগড়াবাজার, ফরাক্কাবাদ বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর শহরের খুচরা কাঁচামাল ব্যবসায়ী বিক্রেতা মজিবুর রহমান, মনির হোসেন, মান্নান মিয়া জানান, বাজার দর সকাল-দুপুর-বিকেলে উঠা নামা করে। যার ফলে কেউ বেশীতে আবার যারা কমে কিনতে পারে তারা কম দরে বিক্রি করে। বাজার দর ঠিক হতে আরও সময় লাগবে।