ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বলেছেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে দেশের শেয়ারবাজার গতি ফিরে পাবে। দীর্ঘদিনের অনিয়ম-দুনীতির বিষয়ে টাক্সফোর্স কাজ করছে। ইতোমধ্যে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ এ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। সিএমজেএফ সভাপতি এস এম গোলাম সামদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু আলী।
মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘জুনের মধ্যে সব সংস্কারগুলো শেষ হবে না। তবে কিছু কিছু সংস্কার হয়ে যাবে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সহায়তা করবে। বিনিয়োগিকারী বিশ্বাস করতে শুরু করবে যে, সংস্কার হচ্ছে। শেয়ারবাজারে দীর্ঘস্থায়ী বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে। এখানে অন্যায় করে ছাড় পাওয়া যাবে না, সেই আস্থা ফিরবে। ফলে জুন-নাগাদ সংস্কারের কিছু বিষয় বাজারে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে। আমরা আশা করছি, জুন-নাগাদ শেয়ারবাজারে ভালো অবস্থা দেখতে পারবো।’
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এরইমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কাজের ফলাফল পেতে একটু সময় লাগবে। অনেকটা একটি ভবনের ভিত্তি নির্মাণ যেমন বাইরে থেকে দেখা যায় না, সেরকম। তবে ভবনের ওপরে নির্মাণ কাজটা সবাই দেখতে পায়। কিন্তু আসল কাজটা করা হয় ওই ভিত্তি নির্মাণের সময়।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমিনুল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে ডিএসইর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ চারটি কাজে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এগুলো হলো সরকারের দিক থেকে শেয়ারবাজারের জন্য আলাদা কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, দেশি-বিদেশি কিছু ভালো কোম্পানিকে যত দ্রুত সম্ভব বাজারে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণাত্মক ঋণহিসাব বা নেগেটিভ ইকুইটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা এবং শেয়ারবাজারে সুবিধাভোগী (ইনসাইডার) লেনদেন ও কারসাজি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে শেয়ারবাজারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তা হয়নি। প্রত্যাশার লেভেল থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনেক সমস্যায় ছিল। এরমধ্যে অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের মানবসম্পদের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে। আর ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনেও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ডিএসইতে কোনও চাটার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট নেই। আমরা চাটার্ড অ্যাকাউনটেন্ট নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
সফটওয়্যার সমস্যায় ডিইএসইতে লেনদেনের বিঘ্ন হওয়ার ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সক্ষমতার একটা জায়গা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা। কারণ ট্রেড (লেনদেন) এখন সবই ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হচ্ছে। সেটেলমেন্টও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে হচ্ছে। আমরা যে প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছি, সেটা আমরা এই মুহূর্তে দেখছি আন্তর্জাতিক মানের প্লাটফর্ম।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ততটা ভালো নেই। ব্যাংকিং সেক্টরের একটা অস্থিরতা, সেখানে আমরা আশা করছি, কিছুটা স্থিতিশীলতা এসেছে। এখনও আমরা প্রত্যাশিত অবস্থায় যেতে পারিনি। তবে আমরা আশাবাদী, জুন-নাগাদ শেয়ারবাজারে ইতিবাচক ধারা দেখতে পারবো।’