বাংলাদেশকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৮৫০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে কোয়ার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইআরডি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এশীয় উইংয়ের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের পক্ষে কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কিম তে সো ঋণ চুক্তিতে নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে ‘প্রোগ্রাম লোন ফর সাসটেইনেবল ইকোনোমিক রিকভারি সংক্রান্ত ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। করোনা মহামারির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তা করতে ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং তথ্য প্রযুক্তির প্রসারে নমনীয় ঋণ সহায়তা দিয়ে আসছে। ঋণটি নমনীয় প্রকৃতির যার বাৎসরিক সুদের হার মাত্র ০ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ঋণ পরিশোধকাল ১৫ (পনের) বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর।
প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ঘাটতি বাজেটের জন্য বৈচিত্র্যময় উৎস সৃষ্টি এবং ইসলামিক ব্যাংকসমূহকে সরকারের ঋণ গ্রহণ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্তিকরণ, ডিজিটালাইজেশনসহ উন্নততর কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধকরণ এবং ভ্যাট আদায় নিশ্চিতকরণে ব্যবহার করা হবে। কর্মসূচির মাধ্যমে করদাতার সংখ্যা বাড়বে আয়করের পরিমাণ বাড়ানো হবে। এছাড়া দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নত কর সেবা প্রদান, উইথহোল্ডিং করের জন্য ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে উন্নত ব্যবস্থাপনা, কোভিডের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নতুন ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির অধীনে বাস্তবায়িত হওয়া প্রথম ঋণ এটি। গত ২৪ অক্টোবর দুই সরকারের মধ্যে এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর আগে করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ৫ বছরের জন্য বাংলাদেশকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত ছাড়ের ঋণ দেবে।
বিশ্বব্যাপী ইডিসিএফ ঋণ প্রাপ্তির দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশের ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পে ইডিসিএফের মাধ্যমে অর্থায়ন করেছে। যার মোট পরিমাণ ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।