ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সভাপতি-সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে সংকটে চবি শিক্ষক সমিতি

সভাপতি-সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে সংকটে চবি শিক্ষক সমিতি

শিক্ষক সমাজের অধিকার আদায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক সমিতির দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। কিন্তু সেই ঐতিহ্য এখন চরম সংকটে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে এই সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

শিক্ষকদের মতে, শিক্ষক সমিতি গঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করার জন্য। এ অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একে অন্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, একে অন্যকে পাশ কাটিয়ে যা করার চেষ্টা করছেন তা অনভিপ্রেত।

শিক্ষকরা জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনের ডাক দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হক। শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে গড়িমসি, শিক্ষক নিয়োগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতির অভিযোগ ও চারুকলা ইনস্টিটিউটে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনের ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে প্রশাসনের চরম ব্যর্থতার অভিযোগ তোলেন তিনি।

এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। এ ছাড়া আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি মানববন্ধন থেকে ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু এর দুই ঘণ্টা পর কর্মসূচির প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রেরণ করেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, চবির সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় উপাচার্যের প্রতিশ্রুতি ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এবং কার্যকরী সভায় সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধকে পাত্তা না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কর্তৃক এই আন্দোলন কর্মসূচি অপ্রয়োজনীয়।

দাবি আদায়ের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই হঠাৎ এই কর্মসূচির আহ্বান করা হয়েছে বলে অভিযোগ আনেন সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, গত বছরের অক্টোবর ও ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত দুটি সিন্ডিকেট সভার পূর্বে প্রায় শতাধিক প্রমোশন বোর্ড সম্পন্ন হয়েছে এবং নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনকৃত বাকি চারটি বোর্ড (ওশোনোগ্রাফি, রসায়ন, ক্রিমিনোলজি ও মাইক্রো বায়োলজি বিভাগ) সর্বশেষ সিন্ডিকেটের পূর্বে প্রমোশন বোর্ডের তারিখ ঘোষণা হয়েছিল। সূত্র জানায়, বর্তমান কমিটির সভাপতি ড. সেলিনা আখতার রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন আবদুল হক। তবে বর্তমান উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকায় তিনি প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনেন। এতে উপাচার্যের আস্থাভাজন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়।

এরপর গত ৪ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হক সাধারণ সম্পাদক ছাড়াই একাই সংগঠনটির কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সভা ডাকেন। গত ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে দুটি পাল্টাপাল্টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এসব ঘটনায় সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এ বিষয়ে জানতে চবির উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শিক্ষক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত