ঢাবিতে চোরসন্দেহে পিটিয়ে হত্যা: আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে মোবাইল চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ছয় শিক্ষার্থীকে আটক করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। জানা গেছে, আটককৃত এই ছয় জনের মধ্যে তিনজনই ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও দুইজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

এর আগে, পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া (২০১৮-১৯ সেশন); ভূগোল বিভাগের আল হুসাইন সাজ্জাদ (২০২০-২১ সেশন), গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ (২০১৮-১৯ সেশন), মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া (২০২১-২২ সেশন); সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম (২০২১-২২ সেশন) এবং মৃত্তিকা, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। তারা শুক্রবার আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

জানা যায়, আটকদের মধ্যে জালাল মিয়া ফজলুল হল শাখা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক ছিলেন। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের রাজনীতি করতেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের চলাকালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগে করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে বেশ সক্রিয় হন।

আল হোসাইন সাজ্জাদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক। জানা গেছে, সাজ্জাদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন।

আহসান উল্লাহ্ ছিলেন ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন উপসম্পাদক। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা জানান, সুমন মিয়া ও ওয়াজিবুল আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের একান্ত অনুগত ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে হলে কাজ করেছেন। ৫ আগস্টের আগে তারা উভয়েই ব্যাচমেট ও জুনিয়রদের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতেন বলে শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আবা/এসআর/২৪