“উই রিভোল্ট” সেনাবাহিনীর একজন মেজর যখন দ্ব্যর্থহীনভাবে নিঃশঙ্ক চিত্তে নিজের এবং পরিবারের জীবনকে বিপদাপন্ন করে এই ঘোষণা করেন, তখন ব্যক্তি হয়ে ওঠেন কালোত্তীর্ণ। কখনও কখনও বহমান সময় ব্যক্তিকে নির্মাণ করে, আবার কখনও ব্যক্তিই তৈরি করে সোনালী অধ্যায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম যেমন সময়ের নির্মাণ, তেমনি শহীদ জিয়া তৈরি করে গেছেন মহাকালের ইতিহাস। আজকের বাংলাদেশ সেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতা মাত্র, যেখানে সময়ের সঙ্গে গড়ে উঠেছে ব্যক্তির এক অনস্বীকার্য মিথোজীবীতা।
যখন একজন দেশপ্রেমিক মহান স্বাধীনতার ঘোষণা করেন, তখন স্বাধীনতা ও ব্যক্তি হয়ে ওঠেন একে অপরের পরিপূরক। কালের স্রোতে, সময়ের প্রবহমানতায় যিনি তাঁর সত্তাকে বিলীন করে দেন জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর স্বার্থে, তখন তিনি হয়ে ওঠেন জাতিসত্তার এক মূর্ত প্রতীক। জাতির সেই আরাধ্য অবয়বের নাম ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান’।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) জিয়া পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মহান বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ‘৭ই নভেম্বর চেতনা; সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রেরণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এভাবেই মত প্রকাশ করেন বক্তারা।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম একটি নক্ষত্রের নাম, যার অপর নাম বাংলাদেশ। শহীদ জিয়াকে ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা না করলে পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের নাম থাকতো না। তবে, গত ১৫ বছর ধরে এই মহান ব্যক্তিত্বকে বিতর্কিত করেছে আওয়ামী সরকার।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই তারাই দেশ ছেড়ে পালায়। শেখ হাসিনা বাংলার ইতিহাসে এক জঘন্য বর্বর মানুষরুপী রক্তপিপাসু, দানব। এই হায়েনার দল এদেশে কেড়ে নিয়েছে দেড় হাজারের বেশি তাজা প্রাণ। পঙ্গু করেছে হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে। আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক। আমৃত্যু লড়েছি, লড়বো এবং সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব সময় প্রতিবাদ করবো। আমরা দেশ ছেড়ে পালাব না। দেশবাসীর কাছে এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ আমরাই বিনির্মাণ করব, ইনশাআল্লাহ।’
জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ড. মো. এমতাজ হোসেন বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকার সবসময় শহিদ জিয়াউর রহমানের নামে অপপ্রচার চালিয়েছে। পুরো বিশ্বের কাছে শহিদ জিয়াউর রহমানকে ছোট করার চেষ্টা করেছেন শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু ইতিহাস হাসিনাকে ক্ষমা করেনি। দেশের মাটি তাকে আশ্রয়হীন করেছে।
রাবির জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ৭ নভেম্বরকে অস্বীকার করা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে অস্বীকার করা। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরির জন্য ৭ নভেম্বরের যে চেতনা সেটা প্রতিফলিত হয়েছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফায়। আমরা এই ৩১ দফার ভিত্তিতে আগামীতে নতুন বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরি করব।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহা. এনামুল হক বলেন, রাতের আঁধারে ভোট চুরি করেই তিন তিনবার ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা গং। জিয়াউর রহমানের সৈনিকরা। আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করব, ইনশাআল্লাহ।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সহ-সভাপতি ড. সি এম মোস্তফা। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্রদলের নেতাকর্মী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রায় ৩ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন