ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজকল্যাণ বিভাগে পরীক্ষা দিতে এসে আটক হয়েছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মী।
বিবার (২ মার্চ) দুপুরে তাদের আটক করে ইবি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটককৃতরা হলেন—শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নাঈম ও কর্মী মারুফ আহমেদ। তারা উভয়ই সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, ওইদিন চতুর্থ বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছিল। বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হওয়া পরীক্ষার দেড় ঘণ্টা পর কক্ষের সামনে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে তাদের পরীক্ষা কক্ষ থেকে বের করা হয়।
পরবর্তীতে ভবনের নিচতলায় নামিয়ে আনার পর মারুফ আহমেদকে শিক্ষার্থীরা মারধর করে। পরে দুজনকে প্রক্টরিয়াল বডির গাড়িতে করে থানায় পাঠানো হয়। পাশাপাশি তাদের উত্তরপত্র কেটে দেন বিভাগের শিক্ষক শ্যাম সুন্দর সরকার।
জানা যায়, গত ৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে সমাজকল্যাণ বিভাগের সামনে মারুফ আহমেদকে ‘নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে একটি পোস্টারও টানানো হয়েছিল। সেখানে ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখানো, শিবির ট্যাগ দিয়ে নিরীহ শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া, রাতের বেলায় র্যাগ দেওয়া এবং দোকান থেকে বিনামূল্যে খাবার নেওয়ার মতো অভিযোগ উল্লেখ করা হয়।
বিভাগের সভাপতি আসমা সাদিয়া রুনা, শিক্ষক শ্যাম সুন্দর সরকার ও মমতা মুস্তারী থানার ওসি বরাবর লিখিতভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন। আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন। তারপরও ওই দুইজন পরীক্ষা দিতে এলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের প্রক্টরিয়াল বডির সহযোগিতায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, “নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও তাদের দোসরদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা তাদের প্রশ্রয় দেবে, তারাও রেহাই পাবে না।”
এ বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি আসমা সাদিয়া রুনা বলেন, “তারা আমাদের না জানিয়েই পরীক্ষা দিতে এসেছিল। পরে জানতে পেরে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, “বিভাগীয় সভাপতির ফোন পেয়ে আমি তাদের বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেই। পরে শিক্ষকরা আমাদের সহযোগিতায় তাদের থানায় হস্তান্তর করে।”
ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। আগে থেকেই নিষিদ্ধ সংগঠন সংশ্লিষ্ট একটি মামলা থানায় রয়েছে। সেই মামলাতেই তাদের চালান দেওয়া হবে।”