ঢাকা সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নববর্ষ উপলক্ষে জাবিতে 'প্রতীকী হালখাতা'

নববর্ষ উপলক্ষে জাবিতে 'প্রতীকী হালখাতা'

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) 'প্রতীকী হালখাতা' আয়োজন করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, জাবি শাখার ব্যানারে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

আয়োজকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বাস্তবতায় বটতলার দোকানগুলোতে এবং হলের দোকান ও ক্যান্টিনে বাকি করতে হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় অনেক শিক্ষার্থী রাজনৈতিক প্রভাব বা বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে দোকানগুলোতে বাকি করেন এবং দীর্ঘসময় তা পরিশোধ করেন না অথবা কখনোই পরিশোধ করেন না। যার কারণে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল দোকানিদের চরম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়, কারো কারো স্থায়ীভাবে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়। তাই যারা এক বছরের বেশি সময় বাকি পরিশোধ করেননি, এই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে তাদের বটতলা ও হলের দোকানের বাকি পরিশোধ করার আহ্বান জানাতে প্রতীকী হালখাতা আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, 'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার ভিন্ন আঙ্গিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। বাংলা নববর্ষে হালখাতার মতো বাংলার পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যগুলো যেনো হারিয়ে না যায় সেজন্যই আমরা প্রতীকী হালখাতার আয়োজন করেছি। আমরা দেখেছি, বিগত ১৬ বছর স্বৈরাচারী শাসনামলে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী এবং শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দোকান ও হলের ক্যান্টিনে হাজার হাজার টাকা বকেয়া রেখেছে। আমরা চাই, বিভিন্ন দোকানে থাকা বাকিগুলো তারা পরিশোধ করে নতুন বছরে হালখাতায় নাম লিখুক।'

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কমর্চারীরা প্রতীকী হালখাতায় অংশ নেন।

অন্যদিকে ‘নববর্ষের ঐক্যতান, ফ্যাসিবাদের অবসান ও মানবতার জয়গান’ প্রতিপাদ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে এদিন সকাল সোয়া আটটায় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান তাঁর বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কমর্চারীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এরপর সকাল পৌনে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের সামনে থেকে একটি বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে অমর একুশের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, 'আমরা এক বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং বিশাল সংগ্রামের পর এবারের নববর্ষ উদযাপন করছি। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর রাষ্ট্র নির্মাণ করে আমরা একাধিকবার হোঁচট খেয়েছি। তবে ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের দেশ গড়ার স্বপ্ন পুনরায় জাগ্রত হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'দল মত নির্বিশেষে সকলে মিলে আমরা বসবাস করবো এবং নতুন বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ হবো। উপাচার্য বলেন, দেশ ও বিশ্বের মানবতার বিরুদ্ধে যে অন্যায়গুলো হচ্ছে সেগুলো আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দূর করতে পারব।'

নববর্ষ,জাবি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত