প্রচণ্ড গরমে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। শরীরে পানি ও লবণের পরিমাণ কমে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। এ সময় পাকস্থলী দুর্বল হয়ে পড়ে, বমি হয়। মাথা ব্যথা ও জ্বরও থাকতে পারে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
* মাথা ব্যথা
* চোখে ঝাপসা দেখা
* মাংসপেশির ব্যথা ও দুর্বলতা
* শ্বাস- প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া
* ত্বক লালচে হয়ে ওঠা
* গরম লাগলেও ঘাম কম হওয়া
* বমি হওয়া
* হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
* হাঁটতে কষ্ট হওয়াহিট স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়
গরমের দিনে কিছু সতর্কতা মেনে চললে হিট স্ট্রোকের বিপদ থেকে বেঁচে থাকা যায়। এগুলো হলো—
* হালকা, ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। কাপড় সাদা বা হালকা রঙের হতে হবে। সুতি কাপড় হলে ভালো।
* যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন।
* বাইরে যেতে হলে মাথার জন্য চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপ বা ছাতা ব্যবহার করুন।
* বাইরে যাঁরা কাজকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তাঁরা মাথায় ছাতা বা মাথা ঢাকার জন্য কাপড়জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
* প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল পান করুন। মনে রাখবেন, গরমে ঘামের সঙ্গে পানি ও লবণ দুই-ই বের হয়ে যায়। তাই পানির সঙ্গে সঙ্গে লবণযুক্ত
পানীয় যেমন-খাবার স্যালাইন, ফলের রস, লাচ্ছি ইত্যাদিও পান করতে হবে। পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে।
* তাপমাত্রা বৃদ্ধিকারী পানীয় যেমন-চা ও কফি যথাসম্ভব কম পান করা উচিত।
* রোদের মধ্যে শ্রমসাধ্য কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। এসব কাজ সম্ভব হলে রাতে বা খুব সকালে করুন। যদি দিনে করতেই হয়, তবে কিছুক্ষণ
পরপর বিশ্রাম নিতে হবে ও প্রচুর পানি এবং স্যালাইন পান করতে হবে।হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে করণীয়
প্রাথমিকভাবে হিট স্ট্রোকের আগে যখন হিট ক্র্যাম্প দেখা দেয়, তখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ সম্ভব। এক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজেই যা করতে পারেন তা হলো—
* দ্রুত শীতল কোনো স্থানে চলে যান। যদি সম্ভব হয়, ফ্যান বা এসি ছেড়ে দিন।
* ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে ফেলুন। সম্ভব হলে গোসল করুন।
* প্রচুর পানি ও খাবার স্যালাইন পান করুন। চা বা কফি পান করবেন না।কিন্তু যদি হিট স্ট্রোক হয়েই যায়, তবে রোগীকে অবশ্যই দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে, ঘরে চিকিৎসা করার কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে রোগীর আশপাশে যাঁরা থাকবেন তাঁদের করণীয় হলো—
* রোগীকে দ্রুত শীতল স্থানে নিয়ে যান।
* তাঁর কাপড় খুলে দিন।
* শরীর পানিতে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। এভাবে তাপমাত্রা কমাতে থাকুন।
* সম্ভব হলে কাঁধে, বগলে ও কুচকিতে বরফ দিন।
* রোগীর জ্ঞান থাকলে তাঁকে খাবার স্যালাইন দিন।
* দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
* সব সময় খেয়াল রাখবেন হিট স্ট্রোকে অজ্ঞান রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং নাড়ি চলছে কি না। প্রয়োজন হলে কৃত্রিমভাবে নিশ্বাস ও নাড়ি চলাচলের
ব্যবস্থা করতে হতে পারে।হিট স্ট্রোকে জীবন বিপদাপন্ন হতে পারে। তাই এই গরমে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে এর থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।