অ্যালার্জির সমস্যায় সবাই কমবেশি ভুগে থাকেন। বিভিন্ন কারণে অ্যালার্জি হয়ে থাকে। শরীর সবসময়ই ক্ষতিকর বস্তুকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। অনেক সময় ক্ষতিকর নয়, এমন বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে শরীর প্রতিরোধের চেষ্টা করে।
শরীরের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে অ্যালার্জি বলে। অ্যালার্জির ফলে শরীরে নানা লক্ষ্মণ দেখা দেয়। যেমন: অ্যালার্জিজনিত সর্দির উপসর্গ হচ্ছে- অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে জল পড়া, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, অনেকের চোখ দিয়েও জল পড়তে থাকে।
অ্যালার্জির সমস্যা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। হাজারও ওষুধ খেলেও এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না। তবে ঘরোয়া কিছু উপায় অনুসরণ করলে নিস্তার পাওয়া যায় অ্যালার্জি থেকে।
ঘরোয়া এমন কিছু খাবার আছে, যা অ্যালার্জি সমাধানে সাহায্য করে। জেনে নিন কোন খাবারগুলো প্রতিরোধ করে অ্যালার্জি-
>> লেবু হলো অন্যতম সাইট্রিক জাতীয় ফল। যা অ্যালার্জিতে দারুণ কাজ করে। পানিতে লেবুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে অ্যালার্জির সমস্যা
কমে।
>> আরেকটি খাবার হলো কলা। এতে থাকা পুষ্টিগুণ অ্যালার্জির সমস্যা সমাধান করে। শরীরে ছোট ছোট ব়্যাশ দেখা দিলে অথবা পেটের সমস্যা
দেখা দিলে কলা ভীষণ উপকারী।
>> আদা অ্যালার্জির জন্য খুব উপকারী। আদা বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরানো, হজমের সমস্যা, এমনকি ডায়ারিয়ার মতো সমস্যাতেও ভীষণ
কার্যকরী। অ্যালার্জি হলে গরম পানিতে আদা ফুটিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
>> অনেক সময় পাকস্থলীতে খুব বেশি পরিমাণে প্রোটিনের আধিক্য হলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে কমলা খেলে উপকার মিলবে।
>> শসা ও গাজর শরীরের জন্য খুবই উপকারী খাবার। অ্যালার্জি দেখা দিলে শসা ও গাজরের রস একসঙ্গে মিশিয়ে খান। এতে অ্যান্টি অ্যালার্জি
উপাদান থাকায় দ্রুত অ্যালার্জির সমস্যা কমিয়ে আনে।
>> শুধু ওজন কমাতেই নয় গ্রিন টি অ্যালার্জির সমস্যা কমায়। গ্রিন টিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান প্রদাহ বিরোধী উপাদান। তাই
অ্যালার্জিক খাবার খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হলে গ্রিন টি পান করুন।অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে ঘরোয়া কিছু সমাধান অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
টি-ট্রি অয়েল: টি-ট্রি অয়েলও ত্বকের অ্যালার্জি দূর করতে দারুণ উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। ত্বকের লালচেভাব এবং চুলকানি থেকে মুক্তি দিতে টি-ট্রি অয়েল দারুণ কাজ করে।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার: অ্যাপল সিডার ভিনেগার সাধারণত ওজন কমাতে এবং হজমজনিত সমস্যা দূর করতে ব্যবহার করা হয়। তবে এতে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড ত্বকে চুলকানি এবং অ্যালার্জির প্রভাবও কমায়। কিন্তু সংবেদনশীল ত্বকে এর ব্যবহার ঠিক নয়।
অ্যালার্জির প্রবণতা কমাতে এক কাপ গরম পানিতে এক টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এবার তুলার সাহায্যে কার্যকর জায়গায় এই মিশ্রণটি লাগান। মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে দিনে অন্তত দু'বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
নারকেল তেল: নারকেল তেল ত্বকের যত্নের জন্য সেরা । এতে থাকা ময়েশ্চারাইজিং অ্যালার্জির ক্ষেত্রে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। শুধু তাই নয়, নারকেল তেল অ্যালার্জির কারণে চুলকানিও কমায়। এজন্য একটি বাটিতে সামান্য নারকেল তেল নিন এবং ৫ সেকেন্ডের জন্য গরম করুন। তারপর অ্যালার্জির লক্ষণ আছে এমন জায়গায় ওই গরম তেল লাগান। তবে মনে রাখবেন, এ্যালার্জি আক্রান্ত স্থানে নারকেল তেল শুধু লাগাবেন, ম্যাসাজ করবেন না। এভাবে এক ঘন্টা রেখে দিন। ৩-৪ ঘন্টা পর পর নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের অ্যালার্জির সমস্যা কমাবে।
অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরার ওষধি গুণাগুণ সম্পর্কে কমবেশি সবারই জানা। অ্যালোভেরা বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়। অ্যালোভেরা ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়। এটি ব্যবহারে ত্বক জ্বালা ভাব এবং চুলকানি কমে। চুলকানি থেকে মুক্তি পেতে প্রথমে কিছুটা তাজা অ্যালোভেরা নিয়ে ত্বকে লাগান। যদি অ্যালোভেরা না থাকে তবে জেল ব্যবহার করতে পারেন। অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এতে উপকার পাবেন।
বেকিং সোডা: ত্বকের অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে বেকিং সোডাও ব্যবহার করতে পারেন। বেকিং সোডা রান্নাঘরের এমন একটি জিনিস যা ত্বকের অনেক সমস্যা দূর করে। তবে এটি ব্যবহার করার সময় কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। এটি ত্বকে পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
ত্বকে বেকিং সোডা ব্যবহার করতে প্রথমে এক চামচ বেকিং সোডা নিন এবং এতে সামান্য পানি যোগ করুন। একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন এবং এটি অ্যালার্জির জায়গায় লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। অ্যালার্জি থেকে মুক্তি পেতে দিনে ৩-৪ বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।