সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে তাকে প্রায়ই দেখা যায়। বেশ জনপ্রিয় মডেল তিনি। তার ছবি দেখে বোঝার উপায় না থাকলেও তিনি কিন্তু রক্ত-মাংসের মানুষ নয়। তবে মানুষ না হলেও তার আয় কিন্তু তাক লাগানোর মতোই।
নাম তার আইতানা লোপেজ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে তাকে। ২৫ বছর বয়সী নারীর অবয়ব ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দিয়ে তাকে তৈরি করেছে স্পেনের এক ইনফ্লুয়েন্সার সংস্থা।
বাস্তবে না থাকলেও এই মডেলের মাসিক আয় ১২ লাখ টাকা
ইউরো নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোলাপি চুলের লোপেজ ইনস্টাগ্রামে দারুণ জনপ্রিয়। বর্তমানে তার ফলোয়ার সংখ্যা ১ লাখ ২২ হাজার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইতানা লোপেজকে প্রতি সপ্তাহে অনেক সেলিব্রেটি ব্যক্তিগত মেসেজ পাঠায়, তার সঙ্গে ডেটে যেতে চায়। দ্য ক্লুলেস নামের সংস্থাটির ডিজাইনার রুবেন ক্রুজ বলেন, ‘আমরা কীভাবে কাজ করছি এর ওপর বিশ্লেষণ করা শুরু করি এবং দেখতে পাই, আমাদের অনেক প্রকল্পই আটকে আছে বা বাতিল হয়ে যাচ্ছে এমনসব সমস্যার কারণে যার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রায়ই তা ইনফ্লুয়েন্সার বা মডেলের ভুলের কারণে হচ্ছিল, ডিজাইনের জন্য নয়।’
এজেন্সিটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রমোটার হিসেবে আইতানা লোপেজকে ব্যবহার করে।
ক্রুজ বলেন, ভার্চুয়াল এ মডেলটি মাসে ১০ হাজার ইউরোরও (১২ লাখ ৬ হাজার টাকা) বেশি আয় করতে পারে। তার গড় মাসিক আয় ৩ হাজার ইউরো (৩ লাখ ৬১ হাজার ৯০০ টাকা)।
ভালো উপার্জনের উদ্দেশ্যেই আইতানাকে তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে ক্রুজ বলেন, ‘অহংকার দেখায় বা শুধু পোজ দিয়েই অনেক পয়সা কামাতে চায় এমন মানুষদের ওপর আমাদের আর নির্ভর করতে না হয়।’
বর্তমানে একটি স্পোর্টস সাপ্লিমেন্ট কোম্পানি আইতানাকে ব্যবহার করছে। ফ্যানভ্যুতেও এর ছবি আপলোড করা হচ্ছে। এটি অনলিফ্যানের মতো একটি প্ল্যাটফর্ম।
‘একদিন এক বিখ্যাত লাতিন–মার্কিন অভিনেতা আইতানার সঙ্গে ডেটে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এ অভিনেতার ৫০ লাখেরও বেশি ফলোয়ার আছে এবং আমাদের টিমের কয়েকজন শৈশবে তার অভিনীত টিভি সিরিজ দেখেছে। বাস্তবে আইতানার যে অস্তিত্ব নেই, এ নিয়ে তার কোনো ধারণাই ছিল না!’ , বলেন ক্রুজ।
আইতানাকে আরও দক্ষ ও বাস্তব করে তুলতে কাজ করছে একটি দল। ছকে বাঁধা দৈনন্দিন কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদনের জন্য তাকে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আইতানা এতটাই সফল হয়েছে যে এর ডিজাইনাররা ‘মাইয়া’ নামের আরেকটি ভার্চুয়াল মডেল তৈরি করেছে। কোনো নামই শুধু হেঁয়ালি করে দেওয়া হয়নি। প্রত্যেকটি নামই স্প্যানিশ ভাষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বোঝায়।
তবে বলা যায়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চাকরি কাড়ছে সাধারণের। আগামিদিনে যে এই সংখ্যা আরও বাড়বে, সে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন নামী সংস্থার কর্তারা। আইতানা যেন নিজের রূপ এবং গুণে সেই ইঙ্গিত আরও জোরালো করছে।