২০২২ সালে বেড়েছে সাংবাদিক হত্যা

জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেস্কো জানিয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বে ৮৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। টানা তিন বছর কমার পর গত বছর সাংবাদিক হত্যা আবার বেড়েছে। সংঘাত চলছে না এমন জায়গায় খুন হয়েছে তিন-চতুর্থাংশ সাংবাদিক। আর ৮৬ জনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সাংবাদিক লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের।


২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গড়ে বছর ৫৮ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে ৯৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। 

আর ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি ১৯ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে মেক্সিকোতে। এ ছাড়া ইউক্রেনে ১০ জন ও হাইতিতে ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন।


ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘবদ্ধ অপরাধ, সশস্ত্র সংঘাত ও জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে কাজ করায় সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্নীতি, পরিবেশগত অপরাধ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিক্ষোভ নিয়ে প্রতিবেদন করার কারণেও সাংবাদিকরা প্রাণ হারিয়েছেন।


ইউনেস্কো বলছে, সাংবাদিক হত্যায় দায়মুক্তির হার প্রায় ৮৬ শতাংশ, যা ‘আশ্চর্যজনকভাবে খুবই বেশি’। এই হার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি।


খুন হওয়া ছাড়াও গত বছর সাংবাদিকরা অন্যরকম নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে আছে গুম, অপহরণ, জোরপূর্বক আটকে রাখা, মামলা দিয়ে হয়রানি ও অনলাইন সহিংসতা, বিশেষ করে নারী সাংবাদিকরা এমন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।


এই পরিসংখ্যানকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে যে, নিহত সাংবাদিকদের অর্ধেকেরও বেশি কর্তব্যরত অবস্থায় টার্গেটের শিকার হয়েছিলেন। এ ছাড়া সাংবাদিকরা ভ্রমণের সময়, তাদের বাড়িতে এবং জনসাধারণের জায়গায় টার্গেট করা হয়েছিল। এটি প্রতিফলিত করে যে, ব্যক্তিগত স্থানেও গণমাধ্যমকর্মীরা নিরাপদ নন।


২০১৮ সালে ৯৯ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যাটি প্রতি বছর ৫৮-এ নেমে এসেছে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের ২০২২ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউক্রেন যুদ্ধ এই অধিক সংখ্যক মৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী। 


ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ২০২২ সালে বেড়ে ২৩-এ দাঁড়িয়েছে, যা আগের বছর ছিল ২০।


তবে প্রতিবেদনে যোগ করা হয়েছে বৈশ্বিক বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে অ-সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে হত্যার দ্বারা চালিত হয়েছে। ২০২২ সালে ৬১ জন মিডিয়া ব্যক্তিকে অ-সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে হত্যা করা হয়েছিল এবং ২০২১ সালে ৩৫ জন নিহত হয়েছিল।


ইউনেস্কো জানিয়েছে, সংগঠিত অপরাধ, সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং উগ্রবাদের উত্থান নিয়ে প্রতিবেদন করার জন্য প্রতিশোধ নেওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে এই সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়েছিল।


ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি, পরিবেশগত অপরাধ এবং প্রতিবাদের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলো কভার করার জন্য কিছু সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।