তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের একসপ্তাহ পার হলেও মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে শতশত মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই দেশে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে।
ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া লোকদের খুঁজে পাওয়ার আশা শেষ হয়ে আসছে। কারণ, উদ্ধার অভিযান সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) শেষ সময়ে প্রবেশ করেছে। অনুসন্ধান কাজে সহায়তাকারী কুকুর ও থার্মাল ক্যামেরা ব্যবহার করে উদ্ধারকারীরা ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।
এক সপ্তাহ আগে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে ৩১ হাজার ৬৪৩ জন ও সিরিয়ায় ৫ হাজার ৭৪১ জন নিহত হয়েছে।
সিরিয়ার বিধ্বস্ত শহর আলেপ্পোতে জাতিসংঘের সহায়তা ইউনিটের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, উদ্ধার অভিযান শেষ হয়ে আসছে। এখন আশ্রয় ও খাবার সরবরাহে জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের কংক্রিট সরালেই মিলছে লাশ।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে চূড়ান্ত সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। সংস্থাটি বলেছে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।
সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেশের ধ্বংসাত্মক ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচওর কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ছয় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ানতেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে ১৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৬ ফেব্রয়ারি) সকালে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক এবং সিরিয়া। তার পর অন্তত ১০০ বার জোরালো আফটার শকে কাঁপে দুই দেশের মাটি। এতে গুঁড়িয়ে যায় দুই দেশের হাজার হাজার হাসপাতাল, স্কুল ও অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। এতে গৃহহীন হয়ে পড়ে দেশ দুটির লাখ লাখ মানুষ।