থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন প্রায়ুথ
প্রকাশ : ১২ জুলাই ২০২৩, ১২:১১ | অনলাইন সংস্করণ
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চান প্রায়ুথ চান ওচা। ২০১৪ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক এই সেনা প্রধান।
প্রয়ুথ (৬৯) ২০১৪ সালে একটি নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। ১৯৩২ সালে নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের অবসানের পর থেকে সেটি ছিল থাইল্যান্ডে ১৩ তম অভ্যুত্থান। এর আগে রাজকীয় সেনাবাহিনী থাইল্যান্ডে গণতন্ত্রকে কখনই প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি।
সব সময়ে প্রায়ুথ নিজেকে একজন সৈনিক হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তার দাবি, তিনি জাতিকে অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষা করার জন্য রাজনীতিতে পা রাখতে বাধ্য হয়েছেন। ক্ষমতা দখলের পর দুর্বল অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা এবং ব্যাপক গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ সত্ত্বেও পদত্যাগ করতে অস্বীকার করে আসছিলেন প্রায়ুথ।
গুজব ছিল যে, ১৪মে নির্বাচনে তার দলের খারাপ পারফরম্যান্স সত্ত্বেও প্রায়ুথ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে থাকার চেষ্টা করতে পারেন। যার ফলাফল পর্যবেক্ষকরা সামরিক সরকারের প্রত্যাখ্যান হিসাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু প্রায়ুথের মঙ্গলবারের বিবৃতিটি ক্রমবর্ধমান সেই গুজবকে উড়িয়ে দিল।
ইউনাইটেড থাই নেশন (ইউটিএন) পার্টির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'এখন থেকে, আমি ইউটিএন পার্টির সদস্য হিসেবে পদত্যাগ করে রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি।'
নতুন কাউকে নিয়োগ না করা পর্যন্ত তিনিই তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকবেন।
দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন থাই গণতন্ত্রপন্থী নেতা পিটা লিমজারোয়েনরাত। মে মাসের নির্বাচনে তার দল নিম্ন হাউজে ১৫১ আসন পেয়েছে।
তবে সম্প্রতি দেশটির সংবিধানে নতুন যে আইন করা হয়েছে তাতে পিটার প্রধানমন্ত্রী হওয়া অনেকটাই অসম্ভব। কারণ নতুন আইন অনুযায়ী দুই হাউসের ৭৫০ ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেই কেবল প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে।
পিটা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও আইনি হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। কমিশন তদন্ত করছে যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি এখন বিলুপ্ত কোম্পানিতে মিডিয়া শেয়ারের হোল্ডিং লুকিয়েছিলেন।
কমিশন যদি মামলাটিকে সাংবিধানিক আদালতে ঠেলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, পিটা একজন আইন প্রণেতা হিসাবে বরখাস্ত হতে পারেন এবং রাজনীতি থেকে দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারেন এবং সম্ভবত জেলেও যেতে হতে পারে।
আদালত গত ২০ বছরে বেশ কয়েকটি গণতন্ত্রপন্থী দলকে ভেঙে দিয়েছে, যার মধ্যে মুভ ফোওয়ার্ডের পূর্বসূরি ফিউচার ফরোয়ার্ডও রয়েছে।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গবেষণা গোষ্ঠী আইএসইএএস ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নেপন জাতুসরিপিটক বলেছেন, 'প্রধানত সামরিক বাহিনী নিযুক্ত সিনেটের কারণে পিটা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার জন্য যথেষ্ট সমর্থন পাবেন, এমন সম্ভাবনা খুবই কম।'
থাইল্যান্ডের নরেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং প্রভাষক পল চেম্বার্স বলেছেন, কিন্তু যদি ফেউ থাইকেও সিনেট দ্বারা অবরুদ্ধ করা হয়, তাহলে ক্ষমতাসীন ফালাং প্রচার দলের প্রার্থী – সাবেক জেনারেল প্রাবিত ওংসুওন – সিনে আসতে পারেন।