মুসলিম শিক্ষার্থীকে মারার নির্দেশ, সেই স্কুল বন্ধ ঘোষণা
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ
শুধু মুসলিম হওয়ার কারণে এক শিশুকে মারার নির্দেশ দেন শিক্ষিকা। ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি স্কুলে এ ঘটনার পর ওই স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলাকালে স্কুলটি বন্ধ রাখা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এ–সংক্রান্ত একটি নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর।
এদিকে, বন্ধ থাকার কারণে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের যেন পড়াশোনার ক্ষতি না হয়, সে জন্য তাদের কাছের স্কুলগুলোতে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে। এ কাজে সহায়তা করবেন শিক্ষা দফতরের কর্মকর্তারা।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মুসলিম শিক্ষার্থীকে চড় মারার ঘটনাটি ঘটে রাজ্যের মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে। তৃপ্তি ত্যাগী নামের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চড় মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্কুলটিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে আস্তে থাপ্পড় মারলে শিক্ষিকা রেগে যাচ্ছেন। বলছেন, এভাবে কি মারছ? জোরে মারো। এভাবে একের পর এক ছাত্র যখন ওই মুসলিম শিশুটিকে মারছে তখন সে হাউমাউ করে কাঁদছে।
ক্যামেরার পেছনে থাকা একজনের উদ্দেশে তৃপ্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি তো বলেই দিয়েছি, যত মুসলিম বাচ্চা আছে, তোমরা এখান থেকে চলে যাও।’
ফুটেজটি ভাইরাল হতেই মুজফ্ফরনগর পুলিশ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। মনসুরপুর পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার বিষয়ে থানার ইনচার্জকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে শিশুটিকে মারা হয়েছিল, সে নাকি নামতা মুখস্ত বলতে পারেনি।
তৃপ্তি ত্যাগীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে এটিকে ‘তুচ্ছ ঘটনা’ দাবি করে তৃপ্তি ত্যাগী বলছেন, সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তিনি এমন নির্দেশ দেননি। ওই মুসলিম শিক্ষার্থী স্কুলে বাড়ির কাজ না করে নিয়ে আসায় তাকে এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে তৃপ্তি বলেন, ‘শিশুর মা-বাবা আমাকে তার ব্যাপারে কঠোর হতে বলেছিলেন। আমি প্রতিবন্ধী, এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বলেছিলাম তাকে চড় মারতে, যেন ও তার বাড়ির কাজ করতে শুরু করে।’
এ নিয়ে মুসলিম ওই শিশুটির বাবা বলেছেন, ‘আমার ছেলের বয়স সাত বছর। গত ২৪ আগস্ট এ ঘটনা ঘটেছে। ওই শিক্ষকের নির্দেশে অন্য শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানকে বারবার মেরেছে। এক–দুই ঘণ্টা ধরে তার ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। সে এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।’