মরক্কোয় রাষ্টীয় শোক, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজারের অধিক

প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১৫ | অনলাইন সংস্করণ

উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১৪শ’ ছাড়াল। এ ছাড়া গৃহহীন হয়েছেন আরও অনেকে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর আলজাজিরার।

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৫৯ জন। তাদের মধ্যে ১৪০০-এর বেশি লোকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় দেশটির দক্ষিণের প্রদেশ মারাখোস অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় হয়েছে।

মরক্কোর শাসক কিং মোহাম্মদ এ ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া বিপর্যস্ত অঞ্চলে খাবার ও ত্রাণ সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটিতে টানা দ্বিতীয়দিনের মতো অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করেছেন।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন আলহাউজ প্রদেশে। এরপরে রয়েছে তারউদান্ত প্রদেশ। তবে এতে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় হয়েছে মারাখোশ অঞ্চলে। এ অঞ্চলটি ইউনেস্কোঘোষিত এতিহ্যবাহী অঞ্চল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে মারাখোস অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছাকাছি আমিজমিজ গ্রামে উদ্ধারকারীরা এখনো দেওয়াল ও পাথর সরিয়ে মরদেহ উদ্ধার করছেন। তবে পাহাড়ি এলাকায় নাজুক রাস্তার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।

মোহাম্মদ আজাও নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি যখন বুঝতে পারি যে, আমার পায়ের নিচের মাটি কাঁপছে তখন আমি আমার সন্তানকে নিয়ে দৌড়ে বের হয়ে গেলাম। কিন্তু আমার প্রতিবেশীরা বের হতে পারেনি। তারা তাদের পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। এর মধ্যে বাবা ও ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া এখনো তার মা ও ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। এ জায়গাটি দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের কারণে দেয়াল ধসে গেছে। এখানে-সেখানে ধ্বংসস্তূপ সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্কিত জনসাধারণ বাড়ি থেকে বের হতে এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করছেন। কেউ কেউ সড়কে এসে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

এর আগে ২০০৪ সালে মরক্কোয় আঘাত হানা এক ভূমিকম্পে ছয় শতাধিক মানুষ আহত হয়। ১৯৬০ সালে আগাদির অঞ্চলে আঘাত হানা ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল।