তৃতীয় দফায় ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দি। চারদিন যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় এই ৩৯ ফিলিস্তিনিকে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসি, আল জাজিরার।
এর আগে তৃতীয় ব্যাচে ১৩ ইসরায়েলিসহ আরও ১৭ বন্দির মুক্তি দেয় হামাস। সোমবার (২৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চার দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের তৃতীয় দিনে ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দির তৃতীয় ব্যাচকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মুক্তি উপলক্ষ্যে রোববার রাতে অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বিশাল সংখ্যক ফিলিস্তিনি জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।
গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এ সময় হামাস ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়।
হামাসের হামলার পর ওইদিন থেকেই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ব্যাপক ও ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। ৪৮ দিন ধরে তাদের অবিরাম হামলায় গাজার বাসিন্দা সাড়ে ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়। কাতারের মধ্যস্থতায় ৪৮ দিন পর তারা হামলা থামিয়ে যুদ্ধে চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় হামাস ও ইসরায়েল, যা শুরু হয় গত শুক্রবার থেকে।
গত শুক্রবার চারদিনের মানবিক বিরতির প্রথম দিনে ইসরায়েলের কারাগার থেকে ৩৯ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। বিনিময়ে ইসরায়েলি ও বিদেশি ২৪ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস।
শাকির মাহাজনা নামে এক ব্যক্তি তার পরিবারের সাথে তার ছেলে ওমরের জন্য রামাল্লায় অপেক্ষা করছিলেন। তার ছেলে ওমরের বয়স সম্প্রতি ১৮ বছর হয়েছে জানিয়ে শাকির আল জাজিরাকে বলেন, ‘প্রথমে আমরা বিশ্বাস করিনি। শেষবার যখন আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম তখন সে হতাশ হয়ে পড়েছিল। সে আমাকে বলেছিল- ‘বাবা আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই’।’
তার ছেলেকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন তার বয়স ১৬ বছর ছিল বলেও জানান তিনি।
নুর আরার নামে এক নারীর ১৭ বছর বয়সী ভাই জেইদকে গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিল। আল জাজিরাকে তিনি বলেছেন, ‘অক্টোবরে যা ঘটেছে তার পরে আমি আরও ভয় পেয়ে যাই। যুদ্ধের কারণে সবকিছু স্থগিত করা হয়েছিল। বিচারও হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা খুশি, কিন্তু আমরা মিশ্র অনুভূতি অনুভব করছি। গাজায় যা ঘটছে তাতে আমাদের আনন্দ অসম্পূর্ণ।’
বন্দিদের মুক্তি উদযাপন করতে তাদের স্বজসসহ শত শত সমর্থকরা হাজির হন। পরিবারকে দীর্ঘসময় পর কাছে আবেগ ধরে রাখতে পারেন না মুক্তিপ্রাপ্ত জিম্মিরা।