গেল বছরের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। আর হামাসের এই হামলায় ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে এনেছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, সংস্থাটির কিছু কর্মী গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অতর্কিত হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। ইসরায়েলের অভিযোগের কারণে মানবিক সহায়তা দেয়া প্রধান সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-তে অর্থায়ন স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সংস্থাটির অন্তত ১২ কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের পথে হেঁটে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইতালিও এই সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে।
কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, ইসরায়েলের অভিযোগ আমলে নিয়ে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ।
ইউএনআরডব্লিউএয়ের কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ভয়াবহ হামলায় ইউএনআরডব্লিউএয়ের বেশ কয়েকজন কর্মী জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। সংস্থার মানবিক সহায়তা প্রদানের সক্ষমতা রক্ষা করতে আমি এই সদস্যদের সঙ্গে অবিলম্বে চুক্তি বাতিল করার এবং সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য শিগগিরই তদন্ত শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, তারা ইসরায়েলের অভিযোগে ‘শঙ্কিত’। ইউরোপের এই দেশটি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, কানাডা, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড এবং জার্মানিও জাতিসংঘের এই সংস্থাকে অতিরিক্ত অর্থায়ন স্থগিত করেছে।
সর্বশেষ জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থায় আর্থিক সহায়তা সাময়িক বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, ‘গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নৃশংস হামলার পর ইউএনআরডব্লিউএয়ের অর্থায়ন স্থগিত করেছে ইতালি সরকার।’ এ ছাড়া ইতালির অন্য মিত্র দেশও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গাজার অভ্যন্তরে বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার কর্মী নিয়ে কাজ করা ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউএনআরডব্লিউএ জাতিসংঘের বৃহত্তম ত্রাণ ও কর্মসংস্থান সংস্থা। সংস্থাটি গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন এবং সিরিয়ার ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।