ভারতে শেয়ার মার্কেট ধসের কারণ বের করতে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। লোকসভা নির্বাচনের পরপরই রাহুলের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ উঠল।
বিরোধী দলের এই নেতা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছেন। তার দাবি গত ৪ জুন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন বিজেপির নেতারা শেয়ারের দাম নিয়ে বিভ্রান্তকর তথ্য ছড়িয়েছেন।
রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেয়ার ব্যবসায়ীদের শেয়ার ক্রয়ে উদ্বুদ্ধ করেন। কিন্তু নির্বাচনের ঘোষণার পরই শেয়ার মার্কেটে ধস নামে।
কংগ্রেস নেতা রাহুলের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে মোদীর দল বিজেপি। বিজেপি নেতা পীযূস গোয়েল বলেছেন, লোকসভা নির্বাচনে হারের হতাশা থেকে রাহুল গান্ধী এখনও বের হতে পারেননি। তাই তিনি শেয়ার মার্কেটের বিনিয়োগকারীদেরও বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছেন।
যৌথ সংসদীয় কমিটিকে এ ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন রাহুল। শেয়ার বাজার ধসের সঙ্গে মোদি ও তার সিনিয়র মন্ত্রীরা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন রাহুল গান্ধী।
তবে রাহুল গান্ধী শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেলেঙ্কারির বিষয়টি ব্যাখা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
তিনি দিন-তারিখ উল্লেখ করে বলেন, ১৩ মে বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, একটি সংবাদ চ্যানেলে, ৪ জুনের আগে শেয়ার কেনার পরামর্শ দিয়েছিলেন বিনিয়োগকারীদের। ১৯ মে, একই চ্যানেলে মোদী খোদ বলেছিলেন, ৪ জুন স্টক মার্কেটে রেকর্ড হবে। ২৮ মে একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছিলেন তিনি।
এরপর, ১ জুন সামনে আসে বুথ ফেরত জরিপের ফল। তাতে ইঙ্গিত দেওয়া হয় ৩৭০ থেকে ৪০০ আসন পেতে চলেছে বিজেপি।
রাহুল দাবি করেন যে, বিজেপি’র অভ্যন্তরীন মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, ২২০ আসন পেতে পারে বিজেপি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জানিয়েছিল, ২০০ থেকে ২২০ পেতে পারে বিজেপি। অর্থাৎ, বিজেপির যে খারাপ ফল হতে চলেছে, তা জানতেন দলটির শীর্ষ নেতারা। আর বুথ ফেরত জরিপগুলোও ভুয়া ছিল। এগুলোতে দেখানো হয়েছিল বিজেপি বিপুল সংখ্যক আসন পেতে চলেছে।
এর প্রেক্ষাপটেই ৩ জুন, স্টক মার্কেট আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেয়। আর ৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশের পর ধাক্কায় পড়ে শেয়ার বাজার। তথ্য দিয়ে রাহুল জানান, ৩০ এবং ৩১ মে শেয়ার বাজারে এর আগের দিনগুলোর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ লগ্নি এসেছিল। এরপর, ৪ জুন ৩০ লাখ কোটি রূপি ক্ষতি হয় খুচরো লগ্নিকারীদের।
রাহুলের দাবি, যারা জানতেন স্টক মার্কেটে করসাজি চলছে, তারাই এ সময়ে লগ্নি করেছিলেন। হাজার কোটি রূপি লগ্নি করা হয়েছিল। বিদেশিরাও লগ্নি করেন। সন্দেহজনক বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এতে লাভবান হয়েছেন, আর ভারতীয় খুচরো লগ্নিকারীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
এদিকে, মে মাসে অমিত শাহ এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শেয়ার মার্কেট ধসের পেছনে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই, তবে এমন গুজব ছড়ালেও আমি ব্যবসায়ীদের ৪ জুনের আগে শেয়ার ক্রয়ের পরামর্শ দিব। কারণ শেয়ারের দাম বাড়বে।