লেবাননে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ২২
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৭ | অনলাইন সংস্করণ
লেবাননে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও বহুসংখ্যক। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার, সেই দিনই এ হামলা চালাল ইসরায়েলের বিমান বাহিনী।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মঙ্গলবারের বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী বৈরুত, পূর্ব লেবাননের বালবেক, দক্ষিণ লেবানের বেন্ত জেবেইল, চাকরা, মধ্যাঞ্চলের আল বাস্তা ও বারবোর থেকে নিহত ও আহতের সংবাদ পাওয়া গেছে।
এদিকে, মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর লেবানন অভিযানের মধ্যেই যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার বিশেষ সেশন আহ্বান করেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই সেশনে লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে অনুমোদন দেয়া হয়।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ অবশ্য সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে যুদ্ধবিরতির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত লেবাননে অভিযান জারি রাখবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
মঙ্গলবার দুই মাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ। এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল লেবানন থেকে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাবে ইসরায়েল। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ সীমান্ত এলাকা থেকে সরে গিয়ে লিটানি নদীর অপরপ্রান্তে চলে যাবে। এছাড়া হিজবুল্লাহ সীমান্তে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ ও নিজেদের পুনরায় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত করতে পারবে না।
গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে আইডিএফের দাবি, এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯৪০ জন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ও যোদ্ধা রয়েছে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।
বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে।
ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে লেবাননে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। -সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি