গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে অস্ত্রবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা পরিষদ।
শুক্রবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা এই চুক্তি অনুমোদন করেছে। আগামী রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ। এখন পূর্ণ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন তিনি। তবে চুক্তিটি ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর অফিস থেকে জানানো হয়, সব রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিকগুলো বিবেচনা করে ও যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে এই প্রস্তাবিত চুক্তি সহায়তা করবে সেটি অনুধাবন করে নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা সরকারকে প্রস্তাবিত কাঠামোকে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের ঐকমত্যের বিষয়টি গত বুধবার সামনে আনে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার। এরপর আজ শুক্রবার নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা ও সরকারের অনুমোদনের পর চুক্তি বাস্তবায়ন ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি পরিকল্পিত কাঠামো অনুযায়ী এগোবে। রোববার থেকে জিম্মি মুক্তি শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির এই চুক্তি যদি শেষ পর্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন শুরু হয়, তাহলে তা চরম বিভীষিকার মধ্যে থাকা গাজাবাসীর জন্য স্বস্তি নিয়ে আসবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিতিশীলতাও কমে আসতে পারে। গাজা যুদ্ধ ঘিরেই লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকে হিজবুল্লাহ ও হুতির মতো ইরানপন্থী বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইসরায়েল।
গাজায় যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে, তা তিন ধাপে কার্যকর করা হবে। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হবে ছয় সপ্তাহের। এ সময় ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী থাকা ১৯ বছরের কম বয়সী নারী ও শিশুদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ সময় গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর একটি অংশকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
এরপর শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। সেখানে ইসরায়েলের বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। এর বিপরীতে আরও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সরিয়ে নেয়া হবে। আর তৃতীয় ধাপে ইসরায়েলের কাছে মৃত জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দেয়া হবে এবং গাজা পুনর্গঠন শুরু হবে।