দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন
স্পিকারের কাছে ক্ষমতা ছাড়তে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭ | অনলাইন সংস্করণ
বাংলাদেশের সাবেক সৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আগস্টের প্রথম দিকে সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু তাদের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করেছে।
দ্য হিন্দু বলছে, তারা জানতে পেরেছে- শেখ হাসিনা আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিকল্পনা করছিলেন এবং সামরিক বাহিনী পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য লকডাউন নিশ্চিত করতে মাঠে ছিল যাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়।
সংবাদমাধ্যমটিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দাবি করেছেন, “আমরা সে সময়ে গণভবনে উপস্থিত ছিলাম এবং ক্রমাগত এই পরিকল্পনাই করছিলাম যে— কীভাবে ছাত্র বিক্ষোভের সমাধান করা যায়। তবে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেছিলেন- (সাবেক) প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক পদত্যাগে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে। সেই কারণেই লকডাউনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।”
নওফেলের দাবি ২০২৪ সালের জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে শেখ হাসিনা চীন সফরে যাওয়ার পর ঢাকার পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয় এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন সর্বাত্মক আন্দোলন তীব্র গণবিক্ষোভের রূপ নেয়। ছাত্ররা যখন ‘এক দফা এক দাবি- শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ ঘোষণা করে তখন মহিবুলকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র-সমন্বয়কারীদের সাথে আলোচনা করতে বলেছিলেন হাসিনা। পরে অবশ্য ছাত্রবিক্ষোভ ব্যাপক তীব্র আকার ধারণ করলে সাবেক এই শিক্ষামন্ত্রী চৌধুরী আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যান এবং শেষ পর্যন্ত আত্মগোপন করেন।
নওফেল মনে করেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোভাবের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। গুমকাণ্ড এবং জুলাই-আগস্টে গণহত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকায় সম্প্রতি মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে। তার কূটনৈতিক ‘লাল পাসপোর্ট’ আরও আগেই বাতিল করা হয়েছিল।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।