নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েই নতুন যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত ছিল দেশটিতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশটির ২২টি অঙ্গরাজ্যে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল আদালতে এ আদেশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন।
তার এই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন ম্যাসাচুসেটসসহ আরও ২০টি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এসব তথ্য ঘোষণা করেছেন বন্টা নিজেই।
বিবৃতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, প্রেসিডেন্ট জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল বিষয়ক যে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, তা অশোভন, অমার্জিত এবং পুরোপুরি অসাংবিধানিক। এই আদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খাপ খায় না। এই আদেশ জারির মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতার বড় ধরনের অপব্যবহার করেছেন এবং এজন্য আমরা তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনব।
তিনি আরও বলেন, আদালতের কাছে আমাদের অনুরোধ, যত শিগগির সম্ভব এ আদেশ আটকে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন এবং মামলা যতদিন চলবে, ততদিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুদের অধিকার যেন কেড়ে না নেওয়া হয়।
ট্রাম্পের আদেশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা এসব অঙ্গরাজ্যের সবগুলোতেই বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শক্তিশালী।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বচানের প্রচারাভিযান চলাকালে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় গেলে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নীতি বাতিল করবেন তিন।সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প, তার মধ্যে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশও ছিল।
ট্রাম্পের আদেশে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যদি অবৈধ অভিবাসীর সন্তান জন্ম নেয়, তাহলে সেই শিশুরা আর মার্কিন নাগরিক হবেন না। এদিকে জন্ম নেওয়া শিশুর মা-বাবা যদি বৈধ ভাবেই আমেরিকায় গিয়ে থাকেন, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনও একজন সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা নন, তাহলেও সেই শিশু মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। এছাড়া কেউ যদি শিক্ষার্থী ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা কিংবা পর্যটন ভিসায় সেখানে গিয়ে সন্তানের জন্ম দেন, তাহলেও সেই শিশু আর মার্কিন নাগরিক হবে না।
এ আদেশ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪ তম অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, দেশটির ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশু মার্কিন নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে। মূলত আফ্রিকা থেকে আসা কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের সন্তানদের স্বীকৃতি দিতে আজ থেকে ১৫০ বছর আগে এ অধ্যাদেশ মার্কিন সংবিধানে সংযোজন করা হয়েছিল।