ট্রাম্পের সাথে পরামর্শ করেই গাজায় হামলা, নিহত বেড়ে ২০৫

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ফের ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৫ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো অনেকে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটিয়েছে ইসরায়েল এবং এরপর অবরুদ্ধ এই উপত্যকা জুড়ে বিমান হামলা শুরু করেছে। বর্বর এই হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২০৫ জন ফিলিস্তিনির নিহত এবং অন্যান্য আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে কমপক্ষে ৭৭ জন এবং গাজা উপত্যকার উত্তরে গাজা সিটিতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

এমন অবস্থায় ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা গাজায় স্থল আক্রমণের হুমকিও দিয়েছেন।

এদিকে বর্বর ও ন্যাক্কারজনক এ হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ইসরায়েল পরামর্শ করেছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট।

তিনি জানান, গাজায় সর্বশেষ হামলা শুরু করার আগে ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছিল ইসরায়েল।

ক্যারোলিন লিভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাস, হুথি ও ইরানসহ যারা ইসরায়েলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে আতঙ্কিত করতে চায়  তাদের মূল্য দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান এবং ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসী প্রক্সিগুলোর উচিত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া। কারণ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র ও তার বন্ধু এবং মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।

এদিকে হামাস বলছে, নেতানিয়াহু এবং তার চরমপন্থি সরকার যুদ্ধবিরতি উল্টে দিতে চাইছে। হামাস ইসরায়েলের নেতানিয়াহু এবং “নাৎসি-ইহুদিবাদী দখলদার বাহিনীকে” গাজার অবরুদ্ধ এবং অরক্ষিত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর “বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ” হামলার জন্য দায়ী করছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, “নেতানিয়াহু এবং তার চরমপন্থি সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি উল্টে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে গাজায় আটক থাকা বন্দিদের অজানা পরিণতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।”

এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার জন্য হামাস যুদ্ধবিরতি মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং আরব লীগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-কে গাজা উপত্যকায় আরোপিত অন্যায্য অবরোধ ভাঙতে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠক করে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস, যাতে ইসরায়েলকে তার আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করা যায়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন লাখেরও বেশি মানুষ। এ ছাড়া দখলদারদের হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে লাখ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।