ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পোপ ফ্রান্সিস বেছে নিয়েছিলেন ঈশ্বর সাধনা

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পোপ ফ্রান্সিস বেছে নিয়েছিলেন ঈশ্বর সাধনা

অনন্তলোকে যাত্রা করেছেন রোমান ক্যাথলিকদের প্রধান ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস। ইস্টার সানডের পরদিন ভ্যাটিকানের কাসা সান্তা মার্তায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

২০১৩ সালের মার্চে পোপ নির্বাচিত হওয়া পোপ ফ্রান্সিসকে বলা হয় ক্যাথলিক চার্চের মহান সংস্কারক। সহনশীলতা ও ভালোবাসার বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে তিনি পেয়েছেন বিপুল জনপ্রিয়তা। বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য তিনি ছিলেন এক নির্লোভ, মানবিক ও সংস্কারমুখী নেতার প্রতিচ্ছবি।

তিনিই প্রথম পোপ হিসেবে ‘ফ্রান্সিস’ নামটি ব্যবহার করছেন। নামটি বেছে নিয়েছিলেন সেন্ট ফ্রান্সিস অব অ্যাসিসির সম্মানে, যিনি দরিদ্রদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর পুরো সময়টাই তিনি দরিদ্র মানুষের কল্যানে কাজ করেছেন।

দীর্ঘদিন ফুসফুসের গুরুতর জটিলতায় ভুগছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। এর আগে ইতালির রোমে একটি হাসপাতালে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা চলেছে তার। পোপ ফ্রান্সিসের পুরো নাম হোর্হে মারিও বেরগোগলিও। জন্ম আর্জেন্টিনার বুয়েন্স এইরেসে, ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর। বাবা ছিলেন ইতালীয় অভিবাসী রেলকর্মী, মা গৃহিণী। পোপের আরও চার ভাই–বোন আছে। নানা চমকপ্রদ ঘটনা রয়েছে এই মানবসেবক পোপের জীবনে।

অনেকেই জানেন না, ধর্মীয় পথে আকৃষ্ট হওয়ার আগে, তরুণ বয়সে পোপ ফ্রান্সিস ট্যাঙ্গো নাচতেন। এক সমবয়সী মেয়ের প্রেমেও পড়েছিলেন। প্রেমিকাকে বলেছিলেন, যদি তাকে বিয়ে না করে, তাহলে এ জীবন ঈশ্বরের সাধনায় উৎসর্গ করে দেবেন ফ্রান্সিস। তার সেই প্রেমিকার নাম এমিলিয়া দামন্তে। ২০১৩ সালে দুজনেরই বয়স যখন ৭৬ বছর, তখন সেই এমিলিয়াই প্রকাশ করেন তাদের গোপন প্রেমের খবর।

২১ বছর বয়সে সংক্রমণের কারণে তার একটি ফুসফুস অপসারণ করা হয়। ছাত্রজীবনে বুয়েন্স এইরেসের একটি বারে বাউন্সার হিসেবেও কাজ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস এবং কিছু সময়ের জন্য ঝাড়ুদারের কাজও করেছেন।

পোপ ফ্রান্সিস দর্শন পড়েছেন এবং বুয়েন্সে এইরেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছেন রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। পরে সাহিত্য, মনোবিজ্ঞান, দর্শন ও ধর্মতত্ত্ব পড়াতেন, এরপর হন বুয়েন্সে এইরেসের আর্চবিশপ।

আর্জেন্টিনায় দায়িত্বে থাকাকালে পদমর্যাদার সুবিধা গ্রহণ না করে নিজেই রান্না করতেন ও বাসে যাতায়াত করতেন। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর ইকোনমি ক্লাসে রোমে উড়ে যান এবং নিজের লাগেজ নিজেই বহন করেন। পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী পোপ ফ্রান্সিসকেও রেড শু দেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি তা পরেননি। বরং পুরোনো, কালো জুতাই পরেছেন নিয়মিত।

২০১৩ সালের শেষ দিকে নিশ্চিত হওয়া যায়, পোপ ফ্রান্সিস রাতে গোপনে ভ্যাটিকান ছেড়ে গরিবদের দান করতে যেতেন। এমনকি পোপাল প্রাসাদে না থেকে ভ্যাটিকানের সেন্ট মার্থা হাউসে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে থাকতেন পোপ ফ্রান্সিস।

পোপ,প্রেম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত