ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

শবে কদরে মা-বাবার জন্য দোয়া

শবে কদরে মা-বাবার জন্য দোয়া

আমাদের অনেকের বাবা-মা নেই। শবে কদরের মর্যাদাপূর্ণ রাতে আমরা তাদের ভুলে যাবো না ইনশাআল্লাহ। তাদের আত্মার প্রশান্তি ও মর্যাদাবৃদ্ধি হয়—এমন দোয়ার উল্লেখ রয়েছে হাদিসে। সুসন্তানের কারণে মা-বাবার সম্মান শুধু দুনিয়াতেই বাড়ে না, পরকালেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

রাসুল (স.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ জান্নাতে নেককার বান্দার মর্যাদা সমুন্নত করবেন, তখন সে বলবে, হে আমার রব, কেন আমার জন্য এই উচ্চ মর্যাদা? তখন আল্লাহ বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে।’ (মুসনাদে আহমদ: ১০৬১০) অর্থাৎ মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনার কারণে মহান আল্লাহ তাঁদের জান্নাতের উচ্চাসন দান করবেন। সুতরাং প্রত্যেকের উচিত মা-বাবার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

সুসন্তানের কারণে মা-বাবার নেকির পথ মৃত্যুর পরও খোলা থাকে। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু তিনটি আমল বন্ধ হয় না। সেগুলো হলো- সদকায়ে জারিয়া, এমন জ্ঞান যার মাধ্যমে উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।’ (মুসলিম: ১৬৩১)

আজ মর্যাদাপূর্ণ রাতে আমরা সুসন্তানের ভূমিকায় থাকব ইনশাআল্লাহ। মা-বাবার জন্য বেশি বেশি দোয়া করব। তাদের জন্য কীভাবে দোয়া করতে হবে তা পবিত্র কোরআনেই শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুরা ইবরাহিমে বর্ণিত একটি দোয়া হলো- رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ‘রাব্বানাগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়ালিল মু’মিনিনা ইয়াওমা ইয়াক্বুমুল হিসাব।’ অর্থ: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! রোজ কেয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

মা-বাবার জন্য আরেকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো- رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ‘রাব্বির হামহুমা, কামা রাব্বায়ানি সাগিরা।’ অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো; যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)

এছাড়াও একটি বিশেষ দোয়া হচ্ছে- رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا উচ্চারণ: ‘রাব্বিগ ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়া, ওয়া লিমান দাখালা বাইতিয়া মু’মিনা; ওয়ালিল মু’মিনিনা ওয়াল মু’মিনাত। ওয়ালা তাজিদিজ জা-লিমিনা ইল্লা তাবারা।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষদের ক্ষমা করুন এবং আপনি জালিমদের ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (সুরা নুহ: ২৮)

উল্লেখ্য, সুসন্তানই হচ্ছে ইহকাল ও পরকালের পাথেয়। যারা সুসন্তান রেখে গেছেন, হাদিসের ভাষ্যমতে, তারা আজ সেই ফল ভোগ করবেন। আল্লাহ তা'আলা মুসলিম উম্মাহকে নিজের সন্তানদের সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন এবং প্রত্যেক সন্তানকে মা-বাবার জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শবে কদর,বাবা-মা,দোয়া
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত