শুরু হলো পবিত্র মাহে রমজান 

প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪, ০১:১৫ | অনলাইন সংস্করণ

দেশের আকাশে সোমবার পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) থেকে শুরু হলো সংযম-সাধনা, আত্মশুদ্ধি আর ত্যাগের মাস।

এসেছে আল্লাহ তায়ালার অধিক থেকে অধিকতর নৈকট্য লাভের সেরা সময়, পরকালীন পাথেয় অর্জনের অভাবনীয় মৌসুম। সিয়াম-সাধনা, ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আসকার এবং তাজকিয়া ও আত্মশুদ্ধির ভরা বসন্ত। মহান আল্লাহ তায়ালা এই মাসের প্রতিটি দিবস-রজনিতে দান করেছেন মুষলধারায় বৃষ্টির মতো অশেষ খায়ের-বরকত-মাগফেরাত এবং অফুরন্ত কল্যাণ। ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হলো রোজা বা সিয়াম। দীর্ঘ ১১টি মাসের পাপরাশি থেকে মুক্ত হওয়ার অপূর্ব সুযোগ এনে দেয় এ মাস। এ মাস প্রশিক্ষণের। রোজা ইসলামের মৌলিক ইবাদতের মধ্যে অন্যতম। আর এ রোজা মুসলমানদের ওপর ফরজ করা হয়েছে।

গতকাল রাতে এশার পরপরই মুসল্লিরা তারাবির সালাত আদায় করেছেন। কেউ মসজিদে, কেউ আপন গৃহে। ভোররাতে সেহরি খেয়ে আজ রোজা শুরু করেছেন রোজাদাররা। ঢাকায় প্রথম দিন  সেহরির শেষ সময় ছিল রাত ৪টা ৫১ মিনিট। আজ মঙ্গলবার প্রথম রোজায় ইফতারের সময় ৬টা ১০ মিনিট। বহু ফজিলত ও পুণ্যময় বৈশিষ্ট্যের ভরা এ মাসটিতেই পবিত্র কুরআন নাজিল হয়। এ মাসেই রয়েছে সহস্র মাসের চেয়ে সেরা একটি রাত-লাইলাতুল কদর। আগামী ৬ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হবে। তবে এই মহামহিমান্বিত রাতটি আসবে রমজানের শেষ দশকের যে কোনো বেজোড় রাতে। সেটা ২১ রমজান থেকে ২৯ রমজানের যে কোনো রাতে হতে পারে। এই লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য অনেকে শেষ দশকে ইতেকাফ করেন। এই মাসের নাম এসেছে আরবি ‘রামাদ’ শব্দ থেকে। এর অর্থ ‘তপ্ত’ বা ‘শুষ্কতা’।

রমজান মাস দোয়া কবুলের মাস। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলিমের দোয়া কবুল করা হয়।’ (মুসনাদ আহমদ)। অন্য হাদিসে রয়েছে, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রমজানের প্রতি রাতে ও দিনে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন এবং প্রতি রাত ও দিবসে মুসলিমের দোয়া-প্রার্থনা কবুল করা হয়।’ (সহি আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব)।

গতকাল সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় দেশের আকাশে রমজান মাসের চাঁদ দর্শনের খবর জানিয়ে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান জানান, ২৯ দিনেই শেষ হলো শাবান মাস। আজ মঙ্গলবার সিয়াম সাধনার মাস শুরু হলো। আগামী ৬ এপ্রিল শনিবার দিনগত রাতে (রমজানের ২৭তম রাত) পবিত্র লাইলাতুল কদর পালিত হবে। রমজান মাস শেষেই আসবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল  ফেতর। ৩০টি রোজা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেক্ষেত্রে ১১ এপ্রিল হতে পারে ঈদুল ফেতর। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, রমজান মাসে প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব আল্লাহ পাক ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কালামে সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন: হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনি ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি অর্জন করতে পারো।

আবু হুরায়রাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন রমজান মাস আসে আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয় এবং দোজখের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। (সহি বুখারি, মুসলিম)।  রসুল সাল্লাল্লাহু আলাহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন,  যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রোজা রাখবে তার আগের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।