হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু, মিনায় দোয়া-ইবাদতে সময় কাটছে হাজিদের
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৪, ১৭:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
সৌদি আরবে আজ ৮ জিলহজ। এদিন মিনায় অবস্থানের মধ্য দিয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এদিন সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওনা করেছেন হাজিরা। সারাদিন এবং সারারাত সেখান অবস্থান করবেন। ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করা সুন্নত।
হাদিস শরিফে এসেছে, জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ৮ জিলহজ মিনায় গমন করেছেন এবং সেখানে জোহর, আছর, মাগরিব, এশা ও ফজর নামাজ পড়েছেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৮/৪৭৮, হাদিস: ১৪৭৫৫; সহিহ মুসলিম: ১/৩৯৬)
৮ জিলহজ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা সুন্নত। আর এই দিনে জোহর থেকে ৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত পুরো সময় এক নাগাড়ে সেখানে অবস্থান করা মোস্তাহাব। (গুনইয়াতুন নাসিক: ১৪৬; রদ্দুল মুহতার: ২/৫০৩; ফতোয়া খানিয়া: ১/২৯৩; আততাজরিদ: ৪/১৯৫৭; আলইখতিয়ার: ১/১৬০)
এছাড়াও মিনায় অবস্থানের পুরোটা সময় হাজিরা তালবিয়া, জিকির ও কোরআন তেলাওয়াতে মশগুল থাকেন। এখানে অবস্থানের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। অল্প সময়ও জিকির-আজকার থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। তাই জিকির ও ইবাদতে মগ্ন থাকা মিনার অত্যন্ত জরুরি আমল। অনর্থক গল্প-গুজব থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
মিনায় অবস্থানকালে বেশি বেশি তালবিয়া ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...’ এবং আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু পড়া উচিত। সম্ভব হলে এ দোয়াটিও পড়া যেতে পারে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু; ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।’ কারণ এই দোয়াকে হাদিসে সর্বোত্তম দোয়া এবং নবীজিসহ পূর্ববর্তী নবী-রাসুলের দোয়া বলা হয়েছে। (জামে তিরমিজি: ৩৫৮৫; শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩৭৭৮)
এই মিনাতে নবী (স.) মদিনাবাসীদের সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেন এবং কালিমার দাওয়াত দেন। অতঃপর তারা মুসলমান হন। মদিনায় ইসলামের প্রচার-প্রসার ও দ্বীনি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মূল প্রক্রিয়াটি এখান থেকে সূচনা হয়। তাই মিনা থেকে দাওয়াতের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য নিয়ত করা উত্তম।
মক্কা থেকে আরাফার ময়দানের দিকে যাওয়ার মহাসড়কের পাশে মিনার অবস্থান। পবিত্র কাবা থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মিনা প্রান্তরের আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার। হজযাত্রীরা কেউ বাসে, কেউ হেঁটে বা অন্য যানবাহনে মিনায় এসে পৌঁছান। মিনায় জোহর, আছর, মাগরিব, এশা এবং ফজরের নামাজ আদায় করে আরাফার ময়দানে উপস্থিত হবেন হাজিরা।
আগামীকাল শনিবার (১৪ জুন) পবিত্র হজের প্রধান রোকন উকুফে আরাফাহ অনুষ্ঠিত হবে। এটাই মূলত হজ। এরপর ১০ জিলহজ মিনায় প্রত্যাবর্তনের পর শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি, মাথা মুণ্ডন, তাওয়াফ জিয়ারত, এরপর ১১ ও ১২ জিলহজ প্রতীকী শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ এবং সবশেষে কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
পবিত্র হজ পালনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি হজ পালন করবেন। বাংলাদেশ থেকে হজ পালন করবেন ৮৫ হাজার ২৫৭ জন।