ঢাকা ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদ আরবি শব্দ। নিদ্রা যাওয়া ও জাগ্রত হওয়া এ পরস্পরবিরোধী দুই অর্থে ব্যবহৃত হয়। আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবী (সা.)-কে বিশেষভাবে রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘হে চাদর আবৃত, রাতের নামাজে দাঁড়াও, কিছু অংশ ছাড়া।’ (সুরা: মুজ্জাম্মিল ১-২) ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় রাত্রিকালীন নামাজকে তাহাজ্জুদ নামাজ বলা হয়। তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ বান্দাদের প্রতি তাদের কাজের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনার আহ্বান জানান।

পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলে ৭৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘রাতের কিছু অংশ কোরআন পাঠসহ জাগ্রত থাকুন।’

ফরজ নামাজের পর তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ফরজ নামাজের পর সব নফল নামাজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো তাহাজ্জুদ নামাজ তথা রাতের নামাজ।’ (মুসলিম, তিরমিজি)

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জুদের নামাজ নবী করিম (সা.)-এর ওপর ফরজ ছিল। উম্মতের ওপর এটি ফরজ না হলেও সব সুন্নাত নামাজের মধ্যে এটিই উত্তম। তাহাজ্জুদ অর্থ ঘুম থেকে জাগা আর তাহাজ্জুদের সময় হলো এশার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে তারপর অর্ধেক রাতের পর নামাজ আদায় করা। সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত থাকে। গভীর রাতে ঘুম থেকে জেগে নামাজ আদায়ে সওয়াব বেশি।

পবিত্র মক্কা ও মদিনায় হারামাইন শরিফাইনে তাহাজ্জুদের সালাতের জন্য আজান দেয়া হয় এবং অতি গুরুত্বের সাথে আদায় করা হয়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, যারা শেষ রাতে ইবাদত ও প্রার্থনা করেন তাদের প্রশংসাস্বরূপ কেয়ামত দিবসে বলবেন, তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রায় অতিবাহিত করে আর রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (সুরা: আযযারিয়াত ১৭-১৮)।

মহান আল্লাহ প্রতি রাতে আমাদের কাছের আসমানে অবতীর্ণ হন, যখন রাতের শেষ তৃতীয় ভাগ অবশিষ্ট থাকে। তিনি তখন বলতে থাকেন, কে আছো যে আমায় ডাকবে? আর আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আছো যে আমার কাছে কিছু চাইবে, আমি তাকে তা দান করব। কে আছো যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আর আমি তাকে ক্ষমা করব। (বুখারি ১১৪৫)

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও নিয়ম

সাধারণত সাহরির সময়ই হলো তাহাজ্জুদের সময়। এ সময়ে শেষ হওয়ার আগেই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে হয়। ঘুম থেকে উঠে ভালোভাবে অজু করে প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে জায়নামাজে বসে জিকির করবেন। এরপর দুই দুই রাকাত করে যত রাকাত সম্ভব আদায় করতে পারবেন।

রসুল (সা.) দুই দুই রাকাত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যে কোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই। দুই দুই রাকাত করে চার রাকাত পড়তে পারবেন। আবার দুই দুই রাকাত করে যত রাকাত ইচ্ছা আদায় করা যায়। ন্যূনতম চার রাকাত আদায় করা উত্তম। যে কয় রাকাতই পড়া হোক, তা নিয়মিত আদায়ের অভ্যাস করা।

হযরত আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করেন, রমজানে নবীজির নামাজ কেমন হতো? তিনি উত্তরে বলেন, ‘হযরত রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানে এবং রমজানের বাইরে এগারো রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না! এরপর আরও চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা তো বলাইবাহুল্য! এরপর তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন। (বুখারি ১/১৫৪)

তাহাজ্জুদ,নামাজ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত