তাবলিগের দুই পক্ষের মধ্যে বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে চলা বিরোধের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী বছর দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার তারিখ এবং কাদের অধীনে হবে তা বিজ্ঞপ্তি আকারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম পর্ব ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি শুরায়ি নেজামের অধীনে হবে। আর দ্বিতীয় পর্ব হবে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি সাদপন্থীদের অধীনে।
মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, আসন্ন বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ, আইন-শৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে ৪ ও ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে সমন্বিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেই সভার কার্যবিবরণী উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সভাপতি তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন যে, বহির্বিশ্বের কাছে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে বিশ্ব ইজতেমা দীর্ঘদিন যাবৎ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজনকে আরও সুন্দর ও মহিমান্বিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি হতে ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (শুরায়ি নেজাম) আয়োজন করবে এবং আগামী ৭-৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ (মাওলানা সাদের অনুসারীরা) আয়োজন করবেন।
বিশ্ব ইজতেমার মাঠ হস্তান্তর প্রসঙ্গে বলেন, প্রথম পর্বের আয়োজনকারীরা তাদের আয়োজন শেষে ইজতেমার মাঠ বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা এর নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ মঙ্গলবার বেলা ৩টার মধ্যে বুঝিয়ে দেবেন। ২য় পর্বের আয়োজনকারীরা ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ বিকেলে উক্ত কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন এবং ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখ দুপুরে উক্ত কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।
এছাড়াও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি, আইন- শৃঙ্খলা রক্ষা ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকি সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয় বলে জানা যায় বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই তাবলিগে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চলছে। সরকারের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা করে আসছে। প্রতি বছর প্রথম পর্বে শুরাপন্থীরা এবং দ্বিতীয় পর্বে সাদপন্থীরা ইজতেমা করে এলেও এবার পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সাদপন্থীরা দাবি তোলেন, তারা প্রথম পর্বে ইজতেমা করবেন। এটা নিয়েই বিরোধী বাঁধে। শুরাপন্থীরা সম্প্রতি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষের উলামা সমাবেশ করে ঘোষণা দেয় দুই পর্বেই তাদের অধীনে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে সাদপন্থীরাও গত শুক্রবার কাকরাইলে শোডাউন করে। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইজতেমার তারিখ এবং কাদের অধীনে হবে সেটা ঠিক করে দেওয়া হলো।