ঢাকা ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ একটি কুফরি বাক্য

‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ একটি কুফরি বাক্য

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের জুমার খুতবায় মুফতি আব্দুল মালেক বলেন: দেশের বিরুদ্ধে যখন শত্রুর ষড়যন্ত্র বেড়ে যায়, তখন বিভিন্ন পরিভাষার ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এগুলো সঠিক অর্থে ব্যবহার না করলে অনেক ক্ষেত্রে ঈমানের পরিপন্থী হয়ে যাবে। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রতি ও ঐক্য’ পরিভাষা। এই পরিভাষা ব্যবহারে সতর্ক থাকা জরুরি। এর অর্থ ও প্রায়োগিক অর্থ যেন ঈমানবিরোধী অর্থপ্রকাশক না হয়।

‘আন্ত:ধর্মীয় সম্প্রতি ও ঐক্য’ এই কথার অর্থ হচ্ছে : দেশের সকল নাগরিক ইনসাফের সাথে জুলুমের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয়ভাবে সহাবস্থান করা। মুসলিম সমাজে অমুসলিমদের ধর্ম পালনে বাধা নেই। তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের জন্য বাধ্যও করা যাবে না। কিন্তু তাদেরকেও এই সমাজের কল্যাণকামী হতে হবে। দেশ-সমাজ বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়া যাবে না।

তিনি বলেন: সমাজে প্রচলিত আরেকটি কথা হচ্ছে, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। এটি সম্পূর্ণ ভুল ও অন্যায় কথা। ইসলামের নীতি হচ্ছে, ধর্ম যার উৎসব তার। হাদিসের ভাষ্য হলো, প্রত্যেক জাতির নিজস্ব উৎসব রয়েছে, আর (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) আমাদের উৎসব। তাই ‘ধর্মীয় সম্প্রতির নামে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ বলা ঠিক নয়। ইসলামে এসব কুফুরি কাজের কোনো বৈধতা নেই।

তিনি আরও বলেন, শান্তি চুক্তির মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। ‘আমান ’ বা শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রধান শর্ত হচ্ছে আমানাত ও ঈমান থাকা। আমানত ও ঈমান আসবে তাকওয়াপূর্ণ জীবন ধারণের মাধ্যমে। এজন্য তাকওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ ক্ষেত্র হচ্ছে আখেরাতের ওপর বিশ্বাস। একজন মানুষের মধ্যে যদি আল্লাহর ভয় ও পরকালে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে সে কখনোই জুলুম ও অবিচার করবে না। তাই সত্যিকার অর্থে শান্তি চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রতিটি নাগরিককে তাকওয়ার রঙে রঙিন হতে হবে।

এছাড়া তিনি মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত বাংলাদেশি কৃতি শিক্ষার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমানের ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এই তালিবুল ইলম ভাই অল্প বয়সে চলে গিয়েছেন। অনেকে বলে থাকেন অকাল মৃত্যু হয়েছে। ইসলামে অকাল মৃত্যু বলে কিছু নেই। প্রত্যেকে তার নির্ধারিত সময়েই চলে যাবে। জীবন ও মৃত্যুকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন আমাদের পরীক্ষার জন্য। তাই আমাদেরকে সর্বদা ঈমান ও ইনসাফের সাথে চলতে হবে এবং সর্বপ্রকার জুলুম থেকে বিরত থাকতে হবে। বিশেষভাবে নারী ও শিশুদের ওপর জুলুম থেকে বাঁচতে হবে। সমাজে অনেক পুরুষ তুচ্ছ কারণে স্ত্রীর ওপর অত্যাচার করে। যে নারী দশ মাস তার সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে জন্ম দিয়ে তাকে বাবা ডাক শুনিয়েছেন, তার প্রতি কীভাবে অবিচার করা যায়! বিদায় হজের ভাষণে রাসুলুল্লাহ (সা) নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করার নির্দেশ দিয়েছেন। নারীকে সম্মান দেয়া মুত্তাকির পরিচয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহি বোঝ দান করুন। আমিন ।

(১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখের জুমার বয়ানের সংক্ষেপিত শ্রæতিলিখন করেছেন: মুহাম্মাদ লুতফেরাব্বী আফনান)

ধর্ম,উৎসব,কুফরি বাক্য
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত