ঢাকা ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নারী-পুরুষের হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ

নারী-পুরুষের হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে, এবং এখন এ প্রবণতা কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে।

মেনোপজের পর মেয়েদের হার্টের সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। এ সময় মহিলাদের হার্টের গঠনগত সমস্যার কারণে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি সব সময় সম্ভব হয় না।

মহিলা ও পুরুষ উভয়েই আক্রান্ত হচ্ছেন, তবে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দুই লিঙ্গের মধ্যে আলাদা হয়। শারীরিক, হরমোনগত, পেশির গঠন ও অন্যান্য জৈবিক কারণে পুরুষ ও মহিলাদের স্বাস্থ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।হৃদরোগের জটিলতা নারী-পুরুষ উভয়েরই হতে পারে, তবে রোগের উপসর্গ ও তার প্রভাব আলাদা হতে পারে। বিশেষ করে, প্রাথমিক অবস্থায় হার্টের সমস্যা সঠিকভাবে শনাক্ত করা কঠিন হয়, এবং এই সমস্যা হলে পুরুষ ও মহিলাদের উপর তার প্রভাবও ভিন্ন হতে পারে।

শুধু তাই নয়, পুরুষ ও নারীর শরীরের গঠন কিন্তু আলাদা।তবে নারীর জীবনে হৃদরোগের শঙ্কা অনেক বেশি বলে সম্প্রতি একটি গবেষণা জরিপ জানিয়েছে।নারীদের হৃদরোগের ঝুঁকি কেন বেশি এ বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা জরুরি।

নারীর রক্তনালিকা ও হৃদপিণ্ড ছোট

নারীদের হৃদপিণ্ড আর রক্তবাহী নালিকা পুরুষদের তুলনায় ছোট। ফলে নারীদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে বেশি। অনেক সময় নারীদের রক্তবাহী নালিকা এতটাই ছোট হয়ে থাকে যে তাদের শিরায় কোনো ব্লকেজ থাকলে তা এনজিওগ্রামে ধরা পড়ে না। এনজিওগ্রামে ধরা পড়েনা বিধায় নারীদের আকস্মিক কোনো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে বেশি।

এন্ডিমেট্রিওসিস রয়েছে যাদের

যে নারীদের এন্ডিওমেট্রিওসিস রয়েছে তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি তিনগুণ বেশি হয়ে থাকে। নারীর প্রজনন-স্বাস্থ্যের সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গ্যাস্টেশনাল ডায়াবেটিস যাদের রয়েছে তাদের জন্য বিষয়টি আরও ঝুঁকির। নারীর গর্ভধারণকালে কিংবা জটিল ধরনের গর্ভধারণের সময়ে হৃদরোগের সম্পর্কও খুঁজে পেয়েছেন চিকিৎসা গবেষকরা। এ ধরনের গর্ভধারণ নারীর শরীরের ওপর বাড়তি চাপ ফেলায় গর্ভজনিত ঝুঁকি অনেক বেশি হয়ে থাকে।

নারীর হৃদরোগের ঝুঁকির লক্ষণ

নারীর হৃদরোগের ঝুঁকির লক্ষণ বিষয়ে এখনও পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি, কারণ যতোটা গবেষণা করা হয়েছে, তার অধিকাংশই পুরুষদের ওপর। এ কারণে নারীর হৃদরোগের ঝুঁকির বিষয়টি বেশ আলাদা। সাধারণত, হৃদরোগ হলে নারীরাও বুকে ব্যথা অনুভব করেন, তবে তাদের হৃদপিণ্ডে ফ্লুর মতো কিছু লক্ষণ বেশি দেখা দেয়। অনেক নারীর মধ্যে ঘন ঘন বমি, মাথা ঘোরা, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ইত্যাদি দেখা যায়, যা অনেকেই ফ্লু হিসেবে ভুল মনে করেন। তবে হৃদরোগ ছাড়াও, নারীদের মধ্যে এমন কিছু রোগও থাকতে পারে, যা এরকম লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। যেমন—

করোনারি স্পাজম: এই ধরনের সমস্যায় নারীর হৃদপিণ্ডে যে ধমনী রক্ত সরবরাহ করে সেটি সংকুচিত হয়ে যায়। এভাবে হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় এবং অনেকাংশে হৃদরোগের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

করোনারি ডিসেকশন: করোনারি আর্টারি ছিঁড়ে গেলে এই সমস্যা হয়ে থাকে। এই সমস্যা ঐ নারীদের হয় যাদের পূর্বে কোনো হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ ছিল না।

টাকোতসুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি: এটি মূলত প্রদাহজনিত সমস্যা। হৃদপিণ্ডে প্রদাহজনিত সমস্যার কারণে অনেক সময় হৃদরোগের এই ধরনের লক্ষণ বেশি দেখা যায়।

এই তিনটি কন্ডিশন অনেকটা হার্ট অ্যাটাকের মতো। তবে হার্ট অ্যাটাকের থেকেও এই কনডিশনগুলোর পরিণতি বাজে হতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। যখনই এমন কোনো সমস্যা দেখা দেয় বা তার আগে সন্দেহ হয় তখন অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

হার্ট অ্যাটাক,লক্ষণ,আক্রান্ত,নারী-পুরুষ,প্রভাব
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত