খুশকি দূর করতে কী করবেন?

জানুয়ারিতে হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মধ্যে একদিন গোসল না করলেই চুলকানি আর খুশকির সমস্যা শুরু হয়ে যায়। শীতে অনেকেই খুশকির সমস্যায় ভোগেন, তবে কখনও সারা বছরই এই সমস্যা থাকতে পারে। বিশেষত শীতকালে ত্বক ও স্ক্যাল্পের শুকিয়ে যাওয়া বা দূষণের কারণে খুশকি বৃদ্ধি পায়। এমন পরিস্থিতিতে, খুশকি দূর করতে কীভাবে উপযুক্ত যত্ন নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট ত্বকরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কৌশিক লাহিড়ি।

খুশকির কারণ কী?

খুশকি হওয়ার পেছনে কিছু সাধারণ কারণ রয়েছে, যেগুলো অনেকেরই অজানা। ডা. লাহিড়ি বলেন, “খুশকি এক ধরনের অসুখ, যাকে বলা হয় ‘সেবোরিক ডার্মাটাইটিস’। এর পেছনে তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে—এক, ছত্রাক সংক্রমণ; দুই, চুলের গোড়ায় মৃত কোষ জমা হওয়া; এবং তিন, দূষণ। ধুলা, ময়লা এবং দূষণ কণাগুলো চুলের গোড়ায় জমে, যা খুশকি তৈরির মূল কারণ।”

এছাড়া, চুলের অযত্নও খুশকির অন্যতম কারণ হলেও, দূষণ কণা এবং মৃত কোষের জমাও ত্বক ও চুলের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং, শুধু চুলের যত্ন নিলেই সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে না।

খুশকি দূর করতে কী করবেন?

খুশকি কমাতে খুব বেশি কসরত করার প্রয়োজন নেই, তবে কিছু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। ডা. লাহিড়ি বলেন, “খুশকি দূর করতে সপ্তাহে দু-তিনবার শ্যাম্পু করুন। যদি সম্ভব হয়, প্রতিদিন শ্যাম্পু করা আরও কার্যকরী। বিশেষত দূষিত এলাকায় বসবাস করলে রোজ শ্যাম্পু করাই ভালো।”

অধিকাংশ ক্ষেত্রে, নিয়মিত শ্যাম্পু করলেই খুশকি কমে যায়। শ্যাম্পু চুল ও স্ক্যাল্পে জমে থাকা ময়লা, তেল এবং খুশকি পরিষ্কার করে। তবে কখনও কখনও শুধু শ্যাম্পু করেও খুশকি পুরোপুরি দূর হয় না। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেয়ে ও স্ক্যাল্পে ওষুধ লাগিয়ে খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

অ্যান্টি-ডানড্রফ শ্যাম্পু কতটা কার্যকরী?

খুশকি হলে অধিকাংশ মানুষ অ্যান্টি-ডানড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহার করেন, তবে কী এগুলো আদৌ কাজ করে? এই প্রশ্নের উত্তরে ডা. লাহিড়ি বলেন, “সব শ্যাম্পুর কাজ একটাই—চুল ও স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা। সুতরাং, দু'টাকার শ্যাম্পু হোক বা দু'হাজার টাকার, কাজের ধরন এক। খুশকি পরিষ্কার করতে অ্যান্টি-ডানড্রফ শ্যাম্পু ব্যবহারের কোনো বিশেষ প্রয়োজন নেই। যে কোনো শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত চুল ও স্ক্যাল্প পরিষ্কার করলেই খুশকি দূর করা সম্ভব।”

এই পরামর্শে স্পষ্ট, খুশকি কমানোর জন্য প্রিয় শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহার করলেই যথেষ্ট। তবে, যদি সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত।