রাষ্ট্রদূতদের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ

প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন সংস্করণ

দেশ সম্পর্কে বিদেশে অপপ্রচার, ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তি রোধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তা ঢাকায় (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) জানাতে বলা হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর দিকে বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ নির্দেশনা দেন।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে অনেকেই দেশ সম্পর্কে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালায়। সে সম্পর্কে তাদের বলেছি, এমন ঘটনা ঘটলে আপনারা ঢাকার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। আপনারা দায়িত্বশীল, সরকার আপনাদের সর্বোচ্চ কাজ দিয়েছে, আপনারা বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যদি দেশ সম্পর্কে বিদেশে এমন অপপ্রচার দেখেন সঙ্গে সঙ্গে আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। এমন ঘটনায় আপনারা 


মন্ত্রণালয়ের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না, মন্ত্রণালয় বলার পরে আপনারা ব্যবস্থা নেবেন এগুলো ভুলে যান, এগুলো পুরোনো চর্চা। আমরা নবদিগন্তে প্রবেশ করেছি এবং আমরা বিশ্বাস করি, আপনারা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল লোক, আপনারা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন যা আপনারা ভালো মনে করেন।


রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের আর কী বলা হয়েছে- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সামনের দিনগুলোতে আমরা কীভাবে কী করব, কী উদযাপন করব- এসব বিষয়ে নববর্ষের দিনে দেশের বাইরের মিশনগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি মন্ত্রী হওয়ার পর একটি প্যাকেজ দিয়েছিলাম। এর একটি ছিল অর্থনৈতিক কূটনীতি, আরেকটি ছিল জন কূটনীতি। এসব বিষয়ে আমাদের কী অর্জন সেসব বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। এবারের নতুন প্যাকেজ হচ্ছে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। আমরা যে টেকসই উন্নয়ন অর্জন করেছি তা ধরে রাখতে হলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার কোনো বিকল্প নেই। মিশনের দূতদের সঙ্গে বৈঠকে আমার প্রধান ফোকাস ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া’- যেটা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। এটা তাদের বলেছি। তাদের আরও বলেছি, আপনারা বিভিন্ন দেশে আছেন ওই সব দেশ কীভাবে স্মার্ট হলো, তারা কীভাবে কী করছে, সেখান থেকে আমাদের জন্য কী পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারি, সেগুলো জানার জন্য বলছি। কূটনীতিকদের সেবার মান ঠিক রাখার জন্য বলেছি, যাতে সেবার মানে ঘাটতি না হয় এবং সম্পদের অপচয় না হয়।


এদিকে দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে ভুল তথ্য-উপাত্ত প্রচার ঠেকাতে সরকারের অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত রোববার এক বৈঠকে কমিটি গঠন করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিুসল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে বিদেশিরা যা জানতে চায়, মূলত সেসব ইস্যু নিয়ে এ কমিটি কাজ করবে। বিদেশিদের সঠিক তথ্য সরবরাহের পাশাপাশি মিথ্যা তথ্য ঠেকাতেও কাজ করবে কমিটি। এ ছাড়া বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করবে কমিটি।


সমন্বয় কমিটি গঠন সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আগেও এমন সমন্বয় কমিটি ছিল; কিন্তু বার্নিং ইস্যু না থাকায় কর্মকর্তারা চলে গেছে। এরপর সমন্বয়টা মাঝে বাধাপ্রাপ্ত হয়। আগেও জাতিসংঘের সেলের যিনি মহাপরিচালক ছিলেন তিনি এ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করতেন, বাকিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে। আগেরটাই আবার নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। কমিটির কাজ হবে কোনো তথ্য পেলে সেটা কতটুকু সত্য বা মিথ্যা তা যাচাই-বাছাই করা। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হচ্ছে স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়। আমরা কোনো তথ্য পেলে তা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সত্য-মিথ্যা যাচাই করা সম্ভব হবে। কমিটি শুধু অপপ্রচার ঠেকাতে কাজ করবে না, সব বিষয় নিয়েই কাজ করবে- সেটা ভালো তথ্যও হতে পারে। কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোনো ধরনের তথ্য বিভ্রাট বা তথ্য এলে যাচাই-বাছাই করে আমাদের জানানোর।


এটা কি নির্বাচনকে সামনে রেখে করা হয়েছে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এর পরিধি অনেক বেশি। নির্দিষ্ট কোনো কিছুকে কেন্দ্র করে করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, কমিটি করার উদ্দেশ্যে গত রোববার বৈঠক হয়নি, উল্টো বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, এ সময়ে সমন্বয় কমে গেছে, তাই এটা আবার চালু হোক। এটা সমন্বয় কমিটি। আমাদের যতগুলো জাতীয় ইস্যু আছে ওই বৈঠকে সেগুলোর সবকিছু নিয়েই আলোচনা করেছি। আলোচনার সবগুলো ইস্যু আপনাদের বলতে পারব না।