ঢাকা ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

‘এনআইডি যেখানেই থাকুক ইভিএমে ঝামেলা হবে না’

‘এনআইডি যেখানেই থাকুক ইভিএমে ঝামেলা হবে না’
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশন অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য যেখানেই এনআইডি থাকুক না কেন ইভিএম ব্যবহারে কোনও ঝামেলা হওয়ার কথা না। এনআইডির ডাটাগুলো অন্য কোথাও থাকলেও টেকনিক্যাল পয়েন্টে কোনও ঝামেলা হবে না বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

‘এনআইডি ইসি থেকে চলে গেলে ভোটদানে কোনও ঝামেলা হবে কি না’ -এ বিষয়ে রোববার (০৮ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসির সম্মেলন কক্ষে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আলোচনায় নির্বাচন কমিশনাররা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, অধ্যাপক হায়দার, ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক কায়কোবাদ প্রমুখ।

শিক্ষাবিদ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘ডাটাবেজ যেখানেই থাকুক সবগুলো একেবারে আইডেন্টিক্যাল হতে হবে। এটা দ্বিমত নাই। যদি আইডেন্টিক্যাল না থাকে এটা হাস্যকর হয়ে যাবে। এটা তো শিউর। এখন এটা কমিশনে আছে না অন্য কোথাও আছে, এটা তো মেটার করে না। কাজেই ভোটার তালিকার যে ডাটা নেওয়া হয় সেটা থেকেই এনআইডি হয়। বেসিক্যালি এখন ইভিএম হবে কি হবে না সেটা নিয়ে আলোচনা হয়নি। আলোচনা হয়েছে যে এই ডাটাগুলো অন্য কোথাও থাকলে ইভিএম ব্যবহারে কোনো ঝামেলা হবে কি না। টেকনিক্যাল পয়েন্ট থেকে তো ঝামেলা হওয়ার কথা না। কারণ একই জিনিস। এখানে থাকুক আর অন্য কোথাও থাকুক।’

তিনি বলেন, ‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে যে আমরা সবাই সেটা স্বীকার করে নিচ্ছি অত্যন্ত সুন্দর একটা ডাটাবেজ আছে। ১৮ বছরের নিচে যারা আছে তাদের তথ্য নিতে চাচ্ছি। এখন কমিশন না অন্য কেউ নেবে এটা নিয়ে আলোচনা করেছি।’

অধ্যাপক হায়দার বলেন, ‘মালিকানা হচ্ছে রাষ্ট্র। সরকারই টাকা দিয়ে এটা (এনআইডি) তৈরি করেছে। টেকনিক্যাল পয়েন্ট থেকে ইতিবাচক, নেতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত কমিশন বা সরকার নেবে। তারা আরো জানবেন বিষয়টা। তারপর তারা আলোচনা করে বিষয়টা সিদ্ধান্ত নেবে তারা। ডাটাবেজ একটা জায়গায় থাকবে। কোনো কোনো দেশে কমিশনের কাছে আছে। কোনো কোনো দেশে সরকারের কাছে আছে। আমরা কোনোটাই জোর দিইনি কার কাছে থাকা উচিত।’

ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘যেখানেই এটা ইউনিক থাকুক। ইউনিক থাকলে যেখানেই থাকুক এটা নিয়ে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। টেকনিক্যাল ফিচারগুলো যদি সঠিক থাকে, ঠিকভাবে ম্যানেজ হয় যার কাছেই থাকুক কোনো সমস্যা নেই। সন্দেহের কিছু হবে না। দেশের বড় সম্পদ। সুষ্ঠুভাবে মেইনটেন হোক এবং যেখান থেকেই হোক আমরা সেটাই চাই।’

অধ্যাপক কায়কোবাদ বলেন, ‘রাষ্ট্রে আমরা ব্যয় সাশ্রয় করি এবং কমিশনের এই বিষয় অভিজ্ঞতা হয়েছে। অনেক সময় একটি কাজ যখন সুষ্ঠুভাবে চলতে থাকে তখন সেটা আমরা অন্য জায়গায় নিয়ে যাই। নানা ধরনের সমস্যায় ভুগি। কো-অর্ডিনেশনে আমরা মোটেই ভাল না। যাতে সুষ্ঠুভাবে কাজটা হয় এটাই আমরা চাই। ইসির অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিত। অন্য যে কোনো প্রতিষ্ঠানেই যাক না কেন তাদের তো এই অভিজ্ঞতা নাই। কাজেই এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো উচিত এবং ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া উচিত।’

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি ১৮ নিচে এনআইডি দেয়, এতে ১৮ বছর পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার হয়ে যাবে। আর নির্বাচন কমিশন চাইলে সেটা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করে নিতে পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এনআইডি কার কাছে থাকবে সেটা কমিশন এবং সরকার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সরকার ইসির কাছ থেকে এনআইডি সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে নানা মহল থেকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে যে এতে ইভিএমে ভোটগ্রহণে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। এছাড়া সাধারণ মানুষের ভোগান্তি, বিড়ম্বনা আরো বাড়তে পারে।

এনআইডি,ইভিএম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত