শনিবার ঢাকায় আসছেন মার্কিন সহকারী মন্ত্রী  

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন সংস্করণ

ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামী শনিবার ঢাকা সফরে আসছেন। তিনি নয়াদিল্লি হয়ে ঢাকায় আসবেন। সদ্য চার দিনের বাংলাদেশ সফর করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা এবং হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে যে আলোচনা করে গেছেন তা এগিয়ে নিতেই আসন্ন সফরে আসছেন ডোনাল্ড লু। এই সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, সম্পর্কের অগ্রাধিকারমূলক ইস্যুতে বৈঠক করতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু আগামী ১২-১৫ জানুয়ারি ভারত ও বাংলাদেশ সফর করবেন। যেখানে জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শ্রম ও মানবাধিকার বিশেষ গুরুত্ব পাবে। দুই পক্ষের সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে বাংলাদেশ সফরে সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লু দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সে সঙ্গে শ্রম এবং মানবাধিকার ইস্যুতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানবেন মন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

ঢাকার কূটনীতিকরা জানান, আসন্ন সফরে দুই পক্ষই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবেন মন্ত্রী ডোনাল্ড লু। 

এই সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এ ছাড়া বাণিজ্য খাতের জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল, বিনিয়োগ এবং রোহিঙ্গা সংকটে গুরুত্ব দেবে ঢাকা। 

সদ্য সমাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার বাংলাদেশ সফরে এসে যেসব ইস্যুতে আলোচনা করেন, মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সফরে সেগুলো আবার আলোচনায় উঠবে। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার রোহিঙ্গা সংকট, দুই পক্ষের সম্পর্কে বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, উন্নয়ন সহযোগিতা, ম্যারিটাইম নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো, সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে আলাপ হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্র চায় যে বাংলাদেশ তাদের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিক। কয়েক বছর আগেই বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র এসব ফোরামে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে। রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচার বাংলাদেশ সফরে এসে সেই প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেন। 

এ ক্ষেত্রে ঢাকার বলেছে, যেকোনো ধরনের অর্থনৈতিক জোট বা ফোরামে অংশ নিতে বাংলাদেশের আপত্তি নেই। তবে কোনো প্রকার সামরিক জোটে যোগ দিতে বাংলাদেশের আগ্রহ নেই। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে আসন্ন সফরে জিসোমিয়া ও আকসা আইন এবং নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব পাবে। গত বছরের শেষে একটি অনুষ্ঠানে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তার নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, ডোনাল্ড লুর সফরে সেই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

ঢাকার কূটনীতিকরা আরও বলছেন যে সদ্য সমাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচারের বাংলাদেশ সফরটি রুটিন সফর ছিল না। কিন্তু সহকারী মন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন সফরটি রুটিন কাজ। এখানে রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচারের সফরটি ভিন্ন বার্তা বহন করে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের প্রথম ইচ্ছা দুই পক্ষের সম্পর্ককে আরও নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া, আরও গভীর করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক যে কর্মকাণ্ড সেটা অব্যাহত আছে। মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই প্রতিবেদককে বলেন, এটা খুব সুখের বিষয়, তিনি আসছেন, আমরা তাকে স্বাগত জানাই। আমাদের সঙ্গে আমেরিকার খুব ভালো সম্পর্ক। তাদের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পৃক্ততা আছে। তিনি এলে বিভিন্ন ইস্যুতে আলাপ হবে। আমার ধারণা, তাতে আমাদের সুসম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো ধরনের সামরিক জোটে যোগ দিতে আগ্রহী নই। তবে অর্থনীতি সংক্রান্ত জোটে যোগ দিতে আপত্তি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই সংক্রান্ত যে প্রস্তাবনা সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।