এইচআইভিতে মারা গেছে ৬১ রোহিঙ্গা 

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

  মো: আরিফুল ইসলাম

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা এলাকা এইচআইভি/এইডস, হেপাটাইটিস সি, ডিপথেরিয়া ইত্যাদির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এসব রোগে এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে ৭১০ জন পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬১২ জনই রোহিঙ্গা। ডিসেম্বর ২২ পরযন্ত ৬১ জন রোহিঙ্গা এইচআইভিতে মৃত্যুবরণ করেছে। ৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নারী কক্সবাজারে বিভিন্ন হোটেলে দেহ ব্যবসায় সক্রিয় রয়েছে।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় আরসাসহ তিনটি সন্ত্রাসী গ্রুপসহ ৭টি ডাকাত দল রোহিঙ্গা এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ ক্যাম্পের ওপর আরসার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। জিরো লাইনে অবস্থিত তমব্রু কোনাপাড়া ক্যাম্পটিতে নিয়মিত টহল ও নজরদারী জোরদার করতে না পারার কারণে সেখানে আরসার সাংগঠনিক কারযক্রম, প্রশিক্ষণ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কারযক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোকে ১০টি দুর্বৃত্ত বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে আরসা সক্রিয় রয়েছে উখিয়া, বালুখালী, পালংখালী, হোয়াইক্যংয়ে, আরএসও এবং মাষ্টার মুন্না দল উখিয়া, পালংখালীতে, ইসলামী মাহাজ ও জাবু ডাকাত দল হোয়াইক্যংয়ে এবং নয়াপাড়া ক্যাম্পে চাকমা ডাকাত দল, নবী হোসেন ডাকাত দল, পুতিয়া ডাকাত দল, সালমান শাহ ডাকাত দল, খালেক ডাকাত দল সক্রিয় বলে উল্লেখ করা হয়।

বেশিরভাগ ক্যাম্পের ওপর আরসার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে উল্লেখ করে এতে আরা বলা হয়- আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আরস ও নবী হোসেন ডাকাত দল প্রায়ই মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আরসার উপস্থিতি ও তাদের সন্দেহভাজন কারযক্রম নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করেছে উল্লেখ করে বলা হয়- জিরো লাইনে অবস্থিত তমব্রু কোনাপাড়া ক্যাম্পটি আরসার সাংগঠনিক কারযক্রম, প্রশিক্ষণ, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

প্রতিবেদনে ২০২১ ও ২০২২ সালে সংঘটিত অপরাধমুলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরা হয়। এদের সার্বিক অপরাধ কিছু কমেছে বলে প্রতীয়মান হয়। তবে এ সময়ে বেড়েছে হত্যাকান্ড। ২০২১ সালে যেখনে ২২টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ৩২টি।

এদিকে ২০২১ সালের চুরি ডাকাতির ঘটনা ৭৭ থেকে কমে ২০২২ সালে ৭৫টি, গোলাগুলির ঘটনা ৫১টা থেকে ১৮ টা, অপহরনের ঘটনা ১৭৩টি থেকে কমে ৮৬টি, আন্ত:কোন্দন ১১টি থেকে কমে একটি, মাদকের ঘটনা ২৬৮টি থেকে ২৪৯টি এবং অন্যান্য অপরাধ ৫৬৭টি থেকে কমে ৫৫৩টি, সংঘটিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জানুয়ারি ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পরযন্ত ২২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত। ৬০টি নাশকতামূলক ও ৬৩টির কারণ জানা যায়নি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিদিন ৯৫ জন শিশু জন্মগ্রহণ করে। ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ১২-১৩ লাখ পরযন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে বলে প্রতিবেদনে ধারণার কথা জানানো হয়।

কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া এর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, মোঃ ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এবং মো: নাসির উদ্দিন অংশ নেন।