দেশের ২৯ তম গ্যাসক্ষেত্র ভোলার ইলিশা-১

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৩, ১০:৪০ | অনলাইন সংস্করণ

দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা করা হয়েছে ভোলার ইলিশা-১ কূপকে। এটি হলো ভোলা জেলার তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র। অন্য দুটি হলো শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্র। সোমবার (২২ মে) সকালে রাজধানীর বারিধারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেন, ভোলার ইলিশা-১ কূপে সম্ভাব্য মজুত ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এখান থেকে দৈনিক উত্তোলন করা যাবে ২০-২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ইলিশা থেকে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। একটা বড় সম্ভাবনার দিক উন্মোচন হলো। দেশের মানুষের জন্য এটা সুখবর।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ইলিশা-১ কূপ থেকে পাওয়া গ্যাসের দাম ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। একই পরিমাণ আমদানি করা গ্যাসের দাম পড়বে ২৮ হাজার কোটি টাকা।

নসরুল হামিদ বলেন, ভোলার গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতে কাজ করছি আমরা। পাইপলাইন নির্মাণ করে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে পাইপলাইন সম্পন্ন করতে চায় সরকার। পাইপলাইনে ভোলার গ্যাস সরবরাহ শুরু হতে লাগবে আরও তিন বছর।

তিনি বলেন, যত শিল্প এলাকা হবে ভবিষ্যতে সেখানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় সরকার। ভোলার গ্যাস দিয়ে মানুষকে কীভাবে সুবিধা দেয়া যায়, সেটা আমরা বিবেচনা করে দেখছি। এর আগে ভোলার ইলিশাকে দেশের নতুন গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জ্বালানি বিভাগে প্রস্তাব পাঠায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।

গত ৮ মার্চ রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম বাপেক্সের হয়ে কূপটি খনন করে। গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাটসংলগ্ন এলাকায় খননকাজ শুরু হয়। তিন হাজার ৪৭৫ মিটার গভীর পর্যন্ত খননকাজ শেষ হয় ২৪ এপ্রিল। প্রথম স্তরের সফলতার পর গত ৭ মে দ্বিতীয় স্তরেও মেলে গ্যাসের সন্ধান। পরে ১৫ মে তৃতীয় স্তরেও পাওয়া যায় গ্যাসের সন্ধান।

তিনটি স্তরে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সাফল্য পাওয়ার পর বাপেক্সের ধারণা, ইলিশা-১ কূপটিতে মজুত রয়েছে ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এ মজুত দেশের বিদ্যমান অন্তত দশটি গ্যাসক্ষেত্রের তুলনায় বেশি। বাপেক্স বলছে, প্রাথমিক অবস্থায় দৈনিক ২০ থেকে ২২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের যোগান দিতে পারবে ইলিশা-১। আর এখান থেকে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে ২৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত।

বাপেক্স সূত্র জানিয়েছে, ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রের পূর্ণাঙ্গ কাঠামো চিহ্নিত করতে আরও কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এখানে পাওয়া গ্যাসের গ্রাহক পর্যায়ে আনুমানিক মূল্য প্রায় ছয় হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। এলএনজি আমদানি বিবেচনায় দাম প্রায় ২৪ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।