নিজের মনকে চিনতে ও মনের যত্ন নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রফেসর ড. মুহিত কামাল বলেছেন, উন্নত বিশ্বে শতকরা ৫০ ভাগ লোক মানুষিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ পেয়ে থাকেন, সেখানে বাংলাদেশে শুধুমাত্র ৬ শতাংশ মানুষ এই সেবা পেয়ে থাকে। আমাদের সুস্থ্য ও কর্মক্ষম থাকতে হলে দেহ ও মন দুটোকেই সুস্থ্য রাখতে হবে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে ব্রিট, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ ও ল্যাবএইড হসপিটালের বিশেষ অনলাইন আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রফেসর ড. মুহিত।
এসময় ড. মুহিত কামাল আরো বলেন, স্ট্রেস মোকাবেলা করতে পারলে আমরা মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারবো এবং আমাদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
ল্যাবএইড হাসপাতালের মানসিক কাউন্সিলর সানজিদা আফরোজ বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের বাইরে নয়। একটি আরেকটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই আসুন আমরা সবাই শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেই, যেমনটি একটি গাছের যত্ন নেয়। তাহলে আমরা নিজে ভাল থাকতে পারবো এবং আশে পাশের মানুষকেও ভাল রাখতে পারব। এরফলে আমরা আমাদের পারিবারিক সম্পর্কগুলো আর দৃঢ় করতে সক্ষম হব।
স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এম শাহজাহান মিনা ছাত্রদের শান্ত শৃঙ্খল জীবন ধারার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি পারিবারিক শিক্ষা এবং মা, বাবা ও অভিভাবকের দায়িত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। ল্যাবএইড ফার্মাসিউটিক্যালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গোলাম রাহমান বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে মানুষের মনের প্রভাবের উপর তিনটি বিষয় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
বিষয়গুলো হলো:
1. Stressful Condition
2. Changing environment
3. Economic Insecurityবিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেছেন, মিডিয়ার দায়িত্ব হল মানুষকে তথ্য জানানো ও মানুষকে শিক্ষিত করে তোলা। তিনি যুব সমাজের মানসিক অস্থিরতা দূরীকরণে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
ল্যাবএইড-এর ডিরেক্টর পারিশা সামিম বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে ল্যাবএইড, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ এবং ব্রিট এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় মানুষিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
ব্রিট এর প্রতিষ্ঠাতা রাহাতুল আশেকিন বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন অথবা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার ঘরে বন্দি থাকার কারণে অনেকে অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। করোনা সংকটে বিশ্বে প্রতি ছয়জনের একজন বেকার হয়েছে আর বাংলাদেশের প্রতি চারজন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার হয়েছে। করোনার সময়ে বিশ্বের অর্ধেক তরুণ-তরুণী উদ্বেগ ও হতাশায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনি যুব সমাজের দায়িত্ব ও নৈতিকতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্র ছাত্রিরা শিক্ষার্থীর বদলে পরীক্ষার্থী হয়ে ওঠে। তিনি তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।