ঢাকা ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দেশে কোরবানির পশুর কোনও সংকট নেই: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

দেশে কোরবানির পশুর কোনও সংকট নেই: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশে কোরবানির পশুর কোনও সংকট নেই। গত চার-পাঁচ বছরের মতো এবারও দেশে উৎপাদিত গবাদিপশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। বিদেশ থেকে পশু আমদানির কোনও প্রয়োজন নেই। পাশের দেশ থেকে সীমান্তপথে যাতে অবৈধভাবে গবাদিপশু আসতে না পারে, সে জন্য কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যে পত্র দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৪ জুন) সচিবালয়ে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরুপণ, সরবরাহ ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবাধ চলাচল পরিবহন নিশ্চিতকল্পে অন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব জানান মন্ত্রী।

প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, চলতি বছর কোরবানিযোগ্য মোট গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩। যা গত বছরের চেয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার ৯৪৪টি বেশি। এ বছর কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫২টি গরু-মহিষ, ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং ২ হাজার ৫৮১টি অন্যান্য প্রজাতির গবাদিপশু।

এ বছর কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। সে হিসাবে এ বছর পশুর ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।

গত বছর (২০২২ সালে) কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯টি এবং কোরবানি করা গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ২১ হাজার ৯৪১টি।

গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, কোরবানি সামনে রেখে কোনও প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য, স্টেরয়েড, হরমোন ও অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া নিরাপদ পদ্ধতিতে গরু হৃষ্টপুষ্টকরণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে এ বছরও স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সমন্বিতভাবে কাজ করবে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এ বছর ৭২ হাজার ৫৬৩ জন খামারিকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবাদিপশু হৃষ্টপুষ্টকরণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

এ সময় পশুখাদ্যে ভেজাল বা নিষিদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোনের ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত সার্ভিল্যান্স ও প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এ বছর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা সারা দেশে ৮৭ হাজার ৯৫টি খামার পরিদর্শন করে এসব খামারে স্টেরয়েড বা হরমোনের অপপ্রয়োগ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

কোরবানির হাটে এ বছর কোনোভাবেই রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ পশু বিক্রি করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে গত বছরের মতো এবারও সারা দেশে পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিমের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম এবং বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম গঠন করা হবে।

তিনি জানান, গত বছর সারা দেশে ৩ হাজার ১৯৫টি কোরবানির পশুর হাটে দায়িত্ব পালনের জন্য ১ হাজার ৬২৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করেছে।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ বছরও সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথে গবাদিপশু পরিবহনের সময় পশু ও পশু বিক্রেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ কোরবানির পশুর ট্রাক ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর যৌথভাবে কাজ করবে।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গবাদিপশু কোরবানির জন্য কোরবানির পশুর চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণ বিষয়ে ৩১ হাজার ৭৯৯ জন পেশাদার ও অপেশাদার কসাইকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে সড়কের ওপরে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই না করে যথাসম্ভব নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করার জনসচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কের ওপরে বা যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই না করে যথাসম্ভব নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করার জনসচেতনতা সৃষ্টির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিগত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে গবাদিপশু বিক্রয় কার্যক্রম চলবে। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে প্রতারণা রোধে অনলাইনে আপলোড করা পশুর মালিকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, পশুর বয়স, ওজন, মূল্য ও ছবি সংযোজন করতে হবে।

কোরবানি,পশু,সংকট
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত