২০১৬ সালের আজকের দিনে (১ জুলাই) নারকীয় জঙ্গি হামলা করা হয়েছিল এই হলি আর্টিজানে, যা দেশের ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ পড়েছিল ভাবমূর্তির সংকটে।
জঙ্গিদের হামলায় সেদিন ঢাকা মহানগর পুলিশের দুই কর্মকর্তা, ১৭ বিদেশি নাগরিক মিলে ২২ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। পরে প্রশাসন অপারেশন থান্ডারবোল্ড নামে অভিযান পরিচালনা করে। রুদ্ধশ্বাস অভিযানের মধ্য দিয়ে জঙ্গি দশা থেকে মুক্ত হন অনেকে। অভিযানে নিহত হন জঙ্গিরা। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর সেটির বিচার প্রক্রিয়া আদালতে চলমান। তবে আজও জানা গেল না এই হামলার নেপথ্যে কারা ছিল এবং কাদের ষড়যন্ত্রে এত বড় হামলা করা হয়েছিল।
হামলায় নিহত জঙ্গিরা হলো— রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিবরাস ইসলাম, মীর সামিহ মোবাশ্বের, খাইরুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জল ওরফে বিকাশ। এর আগে জঙ্গিদের গ্রেনেড ও গুলিতে বনানী থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম নিহত হন।
এদিকে এই ঘটনার পরপর দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক মহলেও নজরে আসে ভয়াবহ এ হামলার ঘটনা। হামলার পরপর জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করে এবং নিজেদের মুখপাত্র ‘আমাক’ নিহত জঙ্গিদের ছবি প্রকাশ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তামিম আহমেদ চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, তানভির কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সরোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মদ ফরীদুল ইসলাম, আকাশ ওরফে চকলেট ও ছোট মিজান। দীর্ঘ দুই বছর তদন্ত শেষে সিটিটিসি ২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
বিভিন্ন সময় অভিযানে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের অব্যাহতি ও এ ঘটনায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সন্দেহভাজন বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিমকেও মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। বিচার শেষে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী ট্রাইবুনাল হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
প্রতিবারের মতো এবারও হামলার স্থান হলি আর্টিজানে নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।