অর্থ পাচারে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান টিআইবি'র

প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

রপ্তানি-আমদানি বাণিজ্যের আড়ালে ৩৩টি তৈরি পোশাক কারখানা ও বায়িং হাউস গত ছয় বছরে কমপক্ষে ৮২১ কোটি টাকা পাচারে জড়িত ছিল মর্মে তথ্য উন্মোচনের জন্য কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরকে (সিআইআইডি) সাধুবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে বিষয়টিকে শুধুমাত্র “হিমশৈলের চূড়া” উল্লেখ করেছে টিআইবি। 

সংস্থাটি অর্থ পাচারের ঘটনার আরও গভীর ও বিস্তৃত তদন্ত সাপেক্ষে অনুকম্পা বা ভয়ের ঊর্ধ্বে থেকে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে। 

মঙ্গলবার টিআইবি থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এই ঘটনা প্রমাণ করে যে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ পাচারের ঘটনা খুঁজে বের করে তা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রয়েছে। তবে ৮২১ কোটি টাকা পাচারের ঘটনা আসলে হিমশৈলের চূড়ামাত্র। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি (জিএফআই) এর ২০১৮ সালের তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়, টাকার অঙ্কে তা প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। হালনাগাদ করা সম্ভব হলে দেশ থেকে শুধু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মিস-ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ হবে বছরে কমপক্ষে এক হাজার কোটি ডলার। অথচ সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রা সংকট মোকাবিলা করতে আইএমএফ থেকে সাড়ে তিন বছরের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ করতে হয়েছে, যা সুদসহ পরিশোধ করতে হবে।’ 

বাণিজ্যভিত্তিক অর্থ পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশে অনেক সময়ই অর্থ পাচারের ঘটনা উন্মোচন হলেও জড়িত ব্যক্তিরা পরিচয় ও অবস্থানের বলে পার পেয়ে যান। বিত্তশালী, রাজনৈতিক আনুকূল্য বা অন্যভাবে প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না, যার দৃষ্টান্ত অতিসম্প্রতিও হতাশাজনকভাবে দেখতে হয়েছে। ৮২১ কোটি টাকা পাচারের ঘটনায় যাঁদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উত্থাপিত হলো, তাঁদের ক্ষেত্রেও এর পুনরাবৃত্তি হবে না, দেশবাসীর এই প্রত্যাশা। 

অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত অনেকগুলো অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত দুদকের এখতিয়ার থেকে সরিয়ে নেওয়ার ফলে অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে দুদক তার প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না বলেও অভিযোগ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ সংশোধন করে দুদকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।